Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪

রোগই বোঝেনি সারাবে কী ভাবে! তোপ মনমোহনের

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, মনমোহন ও রাজনের জুটি একসঙ্গে ক্ষমতায় থাকাকালীনই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি সব থেকে খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই ও ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

ব্যাঙ্কে আর্থিক সঙ্কটের পুরো দায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উপর চাপিয়ে তাঁদের কাঠগড়ায় তুলেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বৃহস্পতিবার পাল্টা জবাব দিলেন মনমোহন। মুম্বইয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, এই সরকার বিরোধীদের উপর দোষ চাপানোর কাজে এতটাই মশগুল যে, অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর রাস্তা খুঁজে উঠতে পারছে না। তাঁর দাবি, অর্থনীতির অসুখ সারাতে হলে আগে রোগটা ঠিকঠাক ধরতে হবে। জানতে হবে তার কারণ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেটাই করে উঠতে পারেনি নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

যদিও আমেরিকায় শিল্প মহলের সামনে নির্মলা দাবি করেছেন, লগ্নির জন্য বিশ্বে ভারতের মতো ভাল জায়গা একটাও নেই। যেখানে একাধারে রয়েছে গণতন্ত্রের প্রতি ভালবাসা ও পুঁজিবাদের জন্য সম্মান। বলেছেন, ‘‘এখনও এটি (ভারত) বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির (অর্থনীতি) মধ্যে অন্যতম। সব থেকে দক্ষ কর্মী ও এমন এক সরকার আছে, যারা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সংস্কারের কাজ করে। উপরন্তু আছে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন।’’ একের পর এক পদক্ষেপ করে তাঁর সরকার কী ভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দায়বদ্ধতা পালন করছেন, সেই বার্তাও দেন।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, মনমোহন ও রাজনের জুটি একসঙ্গে ক্ষমতায় থাকাকালীনই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি সব থেকে খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ওই জুটির আমলে অন্তরঙ্গ নেতাদের একটা ফোনেই ঋণ মঞ্জুর হত বলে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। এ দিন সিংহ তাঁর জমানায় কিছু দুর্বলতার কথা মানলেও, বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে অর্থনীতির প্রতিটি ত্রুটি ইউপিএ সরকারের বলে দোষারোপ করা উচিত নয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর আপনারা ক্ষমতায় আছেন। এতটা সময় মানুষের স্বার্থে ভাল ও বিশ্বাসযোগ্য কাজ করার জন্য যথেষ্ট।’’ তাঁর দাবি, সীতারামনের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট কেন্দ্রের উদাসীনতা। আর এই উদাসীনতা ও অক্ষমতাই আমজনতার ভবিষ্যৎ ও আকাঙ্ক্ষার টুঁটি টিপে ধরছে। টুইটে কংগ্রেস নেতা চিদম্বরমেরও তোপ, আমদানি, রফতানি যে ভাবে কমছে, তাতে পরিষ্কার প্রতি মাসে বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন। ব্যাঙ্ক ঋণ কমায় স্পষ্ট উধাও হয়েছে লগ্নি।

সোমবার মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এ দিন মনমোহনের সাংবাদিক সম্মেলনে নির্মলা প্রসঙ্গ উঠতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘ইউপিএ সরকারের ভুল থেকে শেখা উচিত ছিল এনডিএ-র এবং সেই অনুযায়ী অর্থনীতির সঙ্কট কাটাতে বাতলানো উচিত ছিল বিশ্বাসযোগ্য সমাধান।’’ শিক্ষা নিলে, নীরব মোদীর মতো প্রতারণায় অভিযুক্ত ও অন্যান্য ঋণ খেলাপীরা সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে পারত না বা ব্যাঙ্কের অবস্থা এত খারাপ হত না বলেও মন্তব্য তাঁর।

দ্বিতীয় দফায় দিল্লির তখ্‌তে বসার সময় থেকেই পাঁচ বছরে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের স্বপ্ন ফেরি করছেন নরেন্দ্র মোদী। মনমোহন-সহ সব অর্থনীতিবিদেরাই বারবার বলেছেন, এর জন্য বৃদ্ধি হতে হবে ৮-১০ শতাংশ। যদিও তা বাড়া তো দূরের কথা, নেমেছে ৫ শতাংশে। যা ছ’বছরে সবচেয়ে কম। এ দিনও সিংহের

দাবি, কর্মসংস্থান তৈরি করতে ওই ৮-১০ শতাংশ বৃদ্ধি জরুরি। অথচ ‘সঙ্কটের দুষ্টচক্রে’ যে ভাবে জড়িয়েছে দেশ, তাতে ওই হার হতে পারে বড়জোর ৫-৫.৬ শতাংশ। ফলে কেন্দ্রের ওই লক্ষ্য ছোঁয়ার আশা তিনি দেখছেন না।

যদিও এর বিরোধিতা করে এ দিনই নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার দাবি করেছেন, ওই লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব এবং তা ছোঁবেনই তাঁরা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বৃদ্ধিও পৌঁছবে ৮-৮.৫ শতাংশে।

অন্য বিষয়গুলি:

Manmohan Singh Narendra Modi Economic Slowdown Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy