Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Manik Sarkar

Manik Sarkar: তৃণমূল-বাম কি কাছাকাছি, জল্পনা মানিকের বক্তব্যে

প্রশ্ন উঠছে, পরের বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরায় বিজেপি-বিরোধী জোটে তৃণমূল ও বামকে কি একসঙ্গে দেখা যেতে পারে?

—ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী ও বাপি রায়চৌধুরী
কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ০৫:০৬
Share: Save:

বাংলায় বিপুল সাফল্যের পরে ত্রিপুরা দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে গিয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে এসেছেন, সেখানে ‘মা-মাটি-মানুষের খেলা শুরু’ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে সে রাজ্যে বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের জোটের ভাবনা সরাসরি খারিজ করে দিচ্ছেন না ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মানিক সরকার। তাঁর বক্তব্যের জেরেই জিইয়ে থাকছে নতুন সমীকরণের জল্পনা।

ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সদস্যদের ত্রিপুরার পুলিশের আটক করার ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন মানিকবাবু। তার পরে অভিষেকের সফর ঘিরে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার বেধেছিল ত্রিপুরায়। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, পরের বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরায় বিজেপি-বিরোধী জোটে তৃণমূল ও বামকে কি একসঙ্গে দেখা যেতে পারে? মানিকবাবু বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে এখনও কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। এখনও ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটের আগে অনেকটা সময় বাকি। দেশ ও রাজ্যের পরিস্থিতি দেখে ওই ভোট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন দল ও বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। এখন মন্তব্য করা কি উচিত?’’

সিপিএম অবশ্য মনে করছে, ত্রিপুরায় তৃণমূলের তৎপরতায় নতুন কিছু নেই। দলের জন্মলগ্ন থেকেই তারা ওই রাজ্যে সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু ভোটে সাফল্য পায়নি। সেই কথা উল্লেখ করেই মানিকবাবুর বক্তব্য, ত্রিপুরায় তৃণমূলের সক্রিয়তার প্রভাব বামেদের উপরে কী হতে পারে, তা নিয়ে তাঁদের কোনও আলাদা ভাবনা নেই।

তবে বাংলায় বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে ত্রিপুরার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মানিকবাবু এ রাজ্যের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বিজেপির ফাঁদে পা না দেওয়ার। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানিকবাবুর নাম করেই তাঁর ওই বক্তব্যের কথা নিজের প্রচারে উল্লেখ করেছিলেন। এর পরে মানিকবাবু জোটের তত্ত্ব সরাসরি উড়িয়ে না দেওয়ায় রাজনৈতিক শিবিরের জল্পনায় ইন্ধন যোগ হয়েছে।

ত্রিপুরার বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিকবাবুর যুক্তির সূত্র ধরেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ অবশ্য বলছেন, ‘‘জোটের প্রশ্ন এখন আসছে কেন? তৃণমূল তো ত্রিপুরায় বলার মতো কিছু করেনি এখনও। দলের সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার দিকেই এখন নজর দিচ্ছি।’’

সিপিএমের অন্দর মহলের বক্তব্য, শাসক বিজেপির বিক্ষুব্ধ একটা অংশ তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তৃণমূল-যোগে যাঁদের কথা শোনা যাচ্ছে, তাঁরা সকলেই ত্রিপুরার রাজনীতিতে বহু পরীক্ষিত। এতে সিপিএমের আলাদা ভাবনার কিছু নেই। তবে বিজেপি-বিরোধী ভোটে তৃণমূল উল্লেখযোগ্য ভাবে ভাগ বসানোর জায়গায় গেলে চিন্তার কারণ হতে পারে। সরকারে থাকার সময়ে বাম-বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার সুবিধা পেত সিপিএম। এখন শাসক বিজেপির আমলে সেই অঙ্কই উল্টো দিকে কাজ করতে পারে! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় দলবদলু তৃণমূল ঝাড়শুদ্ধু বিজেপিতে গিয়েছিল! এখন আবার ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়ে এদের দ্বৈরথ-তরজা! তৃণমূলের উদ্যোগ বিজেপিকে সাহায্য করারই শামিল!’’

মানিকবাবুর কথায়, ‘‘এর আগেও তাঁরা ত্রিপুরায় এসেছেন। বামফ্রন্ট কখনও এখানে তৃণমূলকে বাধা দেয়নি। পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জয়ী হওয়ার পরে তৃণমূল নিজেদের সংগঠন বাড়াতে চাইছে। ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে হয়তো তারা সক্রিয় হয়েছে।’’ তাঁর মতে, এখনই তা নিয়ে আলাদা করে ভাবার সময় আসেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Tripura Manik Sarkar Left Front
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy