বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে কিছু দিন আগে। কিন্তু আদালতের নির্দেশমতো খোরপোশের টাকা জোগাড় করতে পারেননি। সেই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে দুই সঙ্গীকে নিয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা করলেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এমনই স্বীকারোক্তি এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে নয়াদিল্লিতে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩১ মার্চ নয়াদিল্লির মৌর্য এনক্লেভ নামে একটি আবাসন থেকে ফোন পায় পুলিশ। জানানো হয়, এক বৃদ্ধের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে তিন জন ডাকাতির চেষ্টা করছেন। ওই খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে ৭২ বছরের হেমন্ত কুমারের স্ত্রী কমলেশ অরোরার মুখে পুরো ঘটনার বর্ণনা শোনে তারা।
ওই বৃদ্ধা পুলিশকে জানান, দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ বাড়িতে কাজ করছিলেন তিনি। কলিং বেল শুনে তিনি দরজা খোলেন। হুড়মুড় করে ঘরে ঢোকেন দু’জন। তাঁদের একজনের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। অভিযুক্তদের একজন তাঁর স্বামীর মাথায় বন্দুক ধরেন। ওই দৃশ্য দেখে মেয়ে দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। কিন্তু পুলিশ ডাকার আগেই তৃতীয় অভিযুক্তের মোটরবাইকে চেপে পালিয়ে যান দু’জন। কোনও জিনিস অবশ্য নিয়ে যাতে পারেননি তাঁরা।
পুলিশ ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩০৯ (৫)/ ৩ (৫) ধারায় মামলা রুজু করেছিল। রুজু হয় অস্ত্র আইনে মামলাও। ঘটনার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। বেশ কয়েক দিন চেষ্টার পর তিন অভিযুক্তকে খুঁজে বার করা হয়। সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনকেই গ্রেফতার করা গিয়েছে। ধৃতদের মধ্যে জনৈক পঙ্কজ ডাকাতির ঘটনার মূল চক্রী। তিনি তাঁর দুই সঙ্গী রামস্বামী এবং হর্ষের সঙ্গে মিলে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। এই ঘটনায় একটি মোটর সাইকেল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি দেশি পিস্তল। ধৃতদের মধ্যে পঙ্কজ জানিয়েছেন, খোরপোশের টাকা জোগাড় করতে তিনি ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন। তাতে রাজি হন তাঁর দুই বন্ধু।
আরও পড়ুন:
পুলিশকে ধৃতেরা আরও জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরে ওই বৃদ্ধের বাড়ির উপর নজর রাখছিলেন তাঁরা। বাড়ির সদস্যেরা কী করেন, কখন বাড়িতে থাকেন, সব তথ্য জোগাড় করে তার পর দুপুরবেলা ডাকাতির চেষ্টা করেন। এই ঘটনার আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।