স্টালিন-পুত্র অভিনেতা এস উদয়নিধি।—নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী ঐক্য গড়তে তিনি সক্রিয় ছিলেন। ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলেন বিজেপি-বিরোধী সব দলকে ডেকে। লোকসভা ভোটে বিজেপির বিপুল জয়ের পরে সেই উদ্যোগে আপাতত ভাটা। তারই মধ্যে কেন্দ্রের কাশ্মীর-অস্ত্রে বিরোধী শিবির যখন ছত্রভঙ্গ, সেই সময়েই নিজের রাজ্যের বাইরে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চে ফের শামিল হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বারের উপলক্ষ তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মূর্তির আবরণ উন্মোচন। চেন্নাইয়ে আজ, বুধবার সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেসের ভি নারায়ণস্বামীর। বিরোধীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে, কাশ্মীরের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি রেখে যে ভাবে কাশ্মীর বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র, প্রথম দিন মুখ না খুললেও মঙ্গলবার তার বিরোধিতায় সরব হয়েছেন মমতা। একই ভাবে বিরোধী অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিনও। স্বভাবতই আজ স্ট্যালিনের দলের মঞ্চে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপে’র বিরুদ্ধে সুর উঠবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
চেন্নাই আসার পথে মঙ্গলবার মমতা বলেন, ‘‘বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হল না। কাশ্মীরের মানুষের মতামত নেওয়া হল না। এই ভাবে বিল পাশ করানো একেবারেই অগণতান্ত্রিক। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’ একই ভাবে স্ট্যালিনের বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে অসাংবিধানিক কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিন।’’
সূত্রের খবর, একের পর এক বিরোধী দল যখন কাশ্মীর-প্রশ্নে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছেন, তখন স্ট্যালিনদের মনোভাব তৃণমূল নেত্রীকে ‘ভরসা’ দিয়েছে। ডিএমকে সভাপতির বিবৃতির পরে তাঁর সঙ্গে কথাও হয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। রাতে চেন্নাইয়ের হোটেলে এসে মমতাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাগতও জানিয়ে গিয়েছেন করুণা-পুত্র স্ট্যালিন।
চেন্নাইয়ে গত ডিসেম্বরেই করুণানিধির মূর্তি উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। সেই মঞ্চ থেকেই রাহুল গাঁধীকে বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্ট্যালিন। এ বার ডিএমকে-র মুখপত্র ‘মুরাসলি’র দফতরে ওই কাগজের প্রতিষ্ঠাতা করুণানিধির মূর্তি বসছে। মমতার কথায়, ‘‘করুণানিধি নিজে ‘মুরাসলি’ কাগজটা করেছিলেন। ওখানে তাঁর মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে ওঁরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’’ তারাভুর থেকে শুরু হয় ওই প্রকাশনা। ষাটের দশকে চেন্নাইয়ে সেই সদর দফতর সরে আসে। এ দিন সেখানেই যাওয়ার কথা মমতীর। পরে এই উপলক্ষে মেরিনা বিচে একটি সভা করার কথা মমতার। কাশ্মীর প্রসঙ্গের পর এই প্রথম মমতার প্রকাশ্য সভা। সেখানে বিজেপি বিরোধী কী সুর বাঁধেন তিনি, সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল
প্রথমে ঠিক ছিল, অন্ধ্র্প্রদেশ ও তেলঙ্গানার দুই মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জগন্মোহন রে়ড্ডি এবং কে চন্দ্রশেখর রাও আজকের অনুষ্ঠানে থাকবেন। কিন্তু মমতা এ দিন ডিএমকে নেতৃত্বের কাছে জেনেছেন, ওই দুই মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন না। তাতে অবশ্য তৃণমূল নেত্রী ‘স্বস্তি’ই পেয়েছেন। ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং টিআরএসের দুই নেতার পাশাপাশি টিডিপি-র চন্দ্রবাবু নায়ডুও কাশ্মীর-প্রশ্নে শাহদের সমর্থন করেছেন।
ডিএমকে-র মুখপত্রের নামে যে অছি পরিষদ আছে, তার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এখন স্ট্যালিন-পুত্র, অভিনেতা উদয়নিধি স্ট্যালিন। লোকসভা ভোটের পরে তিনিই ডিএমকে-র যুব সংগঠনের সম্পাদক হয়েছেন। তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মত, বড় মঞ্চে উদয়নিধির অভিষেক হবে আজই। এই নিয়ে মমতা বলছেন, ‘‘ওর কথা শুনেছি। তবে যুব সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছে, জানতাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy