ফাইল চিত্র।
প্রথমে শোনা গিয়েছিল ১০। বিকেলের আগেই শোনা যায় গুজরাতের সুরতের রিসর্টে বিজেপির ‘হেফাজতে’ রয়েছেন শিবসেনা ও কংগ্রেসের অন্তত ২২ জন বিধায়ক।মঙ্গলবার রাতে বিজেপি সূত্রের দাবি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের শিবিরের ৩০ জন বিধায়ক বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে ডেরা বেঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে।
শিন্ডে অবশ্য এখনও সরাসরি বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর কথা বলেননি। বরং মঙ্গলবার বিকেলে ‘প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের থেকে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি শেখার’ কথা বলেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, উদ্ধবের বাবার ‘হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির’ প্রসঙ্গ তুলে ভবিষ্যতে পদ্ম-শিবিবের সঙ্গে সমঝোতার পথই প্রশস্ত করেছেন। শিন্ডে মনে করিয়ে দিয়েছেন, প্রয়াত বালাসাহেব কোনও অবস্থাতেই হিন্দুত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করার কথা বলেছিলেন। বিজেপি-র দাবি, তাঁর এই মন্তব্য কংগ্রেস ও এনসিপি-র সঙ্গে উদ্ধবের জোট বাঁধাকে নিশানা করেই।
আশির দশকে কলেজের পড়া ছেড়ে বালাসাহেবের ডাকে সাড়া দিয়েই সক্রিয় রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন শিন্ডে। আদতে মহারাষ্ট্রের সাতারার বাসিন্দা হলেও রাজনীতির ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিবসেনার শক্ত ঘাঁটি ঠাণেকে। এ বার তার ‘তৎপরতাতেই’ বালাসাহেব-পুত্র ক্ষমতা হারাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির পরিষদীয় নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস মঙ্গলবার রাতেই সুরত যাচ্ছেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। সেখানে শিন্ডের সঙ্গে তাঁর সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা হবে। সম্ভবত, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে দেবেন্দ্রকেই সমর্থন জানাবেন শিন্ডে। পরিবর্তে উপমুখ্যমন্ত্রী পদটি পাবেন তিনি।
দেবেন্দ্রর স্ত্রী অমৃতা মঙ্গলবার টুইটারে উদ্ধবের না না করে লিখেছেন, ‘এক যে ছিলেন কপট রাজা’। এ ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ছিলেন’ বলে উল্লেখ করা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে উদ্ধবের দুই দূত সুরতের ওই রিসর্টে গিয়ে শিন্ডের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সে সময় উদ্ধব ফোনে বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে কথা বলেন বলেও শিবসেনা সূত্রের খবর। কিন্তু তাতে ‘বরফ গলেনি।’
প্রসঙ্গত, পশ্চিম মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী নেতা শিন্ডে ভোট-রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। ঠাণে পুরসভার নির্বাচনে জিতে। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন তিনি। জেতেন ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটেও। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। ২০১৪-য় বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের মন্ত্রী হন শিন্ডে। ২০১৯-এ মহা বিকাশ অঘাড়ি সরকারের নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব বিধান পরিষদের সদস্য হওয়ায় বিধানসভার দলনেতার দায়িত্ব পান শিন্ডে। মঙ্গলবার বিকেলে উদ্ধব বিধানসভার দলনেতার পদ থেকে শিন্ডেকে অপসারিত করেন। ঘটনাচক্রে, গত সপ্তাহেই উদ্ধবের ছেলে তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্যের অযোধ্যা সফরের সঙ্গী ছিলেন শিন্ডে। তার পরেই তাঁর এই বিদ্রোহ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy