Advertisement
E-Paper

Maharashtra Crisis: ঠাণের অটোচালকই মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে, মহা-রাজনীতিতে শিন্ডের রূপকথার উত্থান

বালাসাহেবের একনিষ্ঠ ভক্ত একনাথ শিন্ডে ছিনিয়ে নিলেন বালাসাহেব-পুত্রের কুর্সি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব তাঁকেই ছেড়ে দিল বিজেপি।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২২ ১৯:১০
Share
Save

বিদ্রোহের গোড়াতেই একনাথ শিন্ডের শিবিরের বিধায়কদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন শিবসেনা প্রধান এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে— ‘‘দল ভাঙলেও একনাথ কি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন? বিজেপি কি ছেড়ে দেবে?’’

শেষ পর্যন্ত উদ্ধবের খোঁচার জবাব দিয়ে শিন্ডেকেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে বেছে নিল বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ যাকে হালফিলে পদ্ম-শিবিরের ‘সবচেয়ে পরিণত পদক্ষেপ’ বলে মনে করছেন। সেই সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসছে দলের নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের ‘আত্মত্যাগের’ কথাও।

যদিও অনেকের মতে, ঠাকরে পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর ফডণবীসদের সামনে এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। কারণ, শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা না হলে মহারাষ্ট্রে ‘অপারেশন লোটাস’ ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা ছিল প্রবল। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বিদ্রোহী বিধায়কদের একাংশ ফের উদ্ধব-মুখী হতে পারেন বলে আঁচ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতারা। প্রয়াত বালাসাহেবের ছেলেকে ‘শিক্ষা’ দিতেই তাই মুখ্যমন্ত্রীর আসন শিন্ডেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

শিবসেনায় থাকাকালীনও অবশ্য শিন্ডে গত এক দশক ধরে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ২০১৪-য় বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীসের ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছিল। তাই সরকার চালানোর ভার শিন্ডেকে দেওয়া হলেও নেপথ্যে বিজেপির বড় ভূমিকা থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বস্তুত, দীর্ঘ দিন ধরেই এনডিএ জোট-ছুট উদ্ধবকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য তৎপর ফডণবীস-সহ মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতারা। ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের পর এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের বিদ্রোহী ভাইপো অজিতের সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপি পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ৮০ ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা দিতে হয়ে তাঁকে। অজিত ফের কাকার শিবিরে আশ্রয় নেন। এ বারও মুখ্যমন্ত্রীর আসনের জন্য গোঁ ধরে থাকলে যে পরিস্থিতি ‘বদলে’ যেতে পারে, তার আঁচ পেয়েই শিন্ডেকে সামনে রেখে সরকার গড়ছে বিজেপি। অনেকের মনে করছেন, আড়াই বছর পরে বিধানসভা ভোট হলে পরিস্থিতি বুঝে একক শক্তিতে লড়ার পথও নিতে পারে বিজেপি।

নরেন্দ্র মোদী জমানায় একাধিক রাজ্যে বিধায়ক ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখলের পথে হেঁটেছে বিজেপি। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে, কর্নাটকে রমেশ জরকিহোলি কিংবা উত্তরাখণ্ডে হরক সিংহ রাওয়তদের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়া হয়নি। ভরসা রাখা হয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ পুরনো নেতাদের প্রতি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে শিন্ডে অবশ্যই ব্যতিক্রম। হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের সংশ্রব এমন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

শিন্ডে ও ফড়ণবীস।

শিন্ডে ও ফড়ণবীস। ছবি: পিটিআই।

তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সম্ভবত প্রয়াত বালাসাহেবের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের। উদ্ধবের হাতে থেকে ‘মরাঠা মানুষের’ রাশ কেড়ে নিতে শিন্ডেকেই সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। তাই বিধায়ক সংখ্যার হিসেবে অনেক এগিয়ে থেকেও তাঁকে ছাড়া হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রিত্ব। হালফিলে বিজেপির এমন ‘ত্যাগের’ উদাহরণ এক মাত্র বিহারে। নীতীশ কুমারের ক্ষেত্রে।

আশির দশকে কলেজের পড়া ছেড়ে বালাসাহেবের ডাকে সাড়া দিয়েই সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন শিন্ডে। আদতে মহারাষ্ট্রের সাতারার বাসিন্দা হলেও রাজনীতির ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিবসেনার শক্ত ঘাঁটি ঠাণেকে। অচিরেই সেখানকার প্রভাবশালী শিবসেনা নেতা আনন্দ দীঘের ‘ডানহাত’ হয়ে ওঠেন তিনি।

শিন্ডে ভোট-রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন ১৯৯৭ সালে। ঠাণে পুরসভার নির্বাচনে জিতে। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন ঠাণেরই কোপরী-পাচরপাখাডী কেন্দ্র থেকে। তার আগে ২০০১ সালে রাজনৈতিক গুরু আনন্দের অকালপ্রয়াণের পর ঠাণে-সহ আশপাশের জেলাগুলির শিবসেনা সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছিল শিন্ডের হাতে।

শিন্ডের সমর্থনে মিছিল মহারাষ্ট্রে।

শিন্ডের সমর্থনে মিছিল মহারাষ্ট্রে। ছবি: পিটিআই।

২০০৯ সালের বিধানসভা ভোটে গুহাগড় কেন্দ্রে অপ্রত্যাশিত ভাবে হেরে যান উদ্ধব-ঘনিষ্ঠ বিরোধী দলনেতা রামদাস কদম। বিধানসভায় শিবসেনার দলনেতার দায়িত্ব পান শিন্ডে। এর পর ২০১৪ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে ফডণবীস সরকারের মন্ত্রী হন। সে বছরই লোকসভা ভোটে কল্যাণ কেন্দ্রে জিতে সাংসদ হন তাঁর পুত্র।

২০১৯-এ বিধানসভা ভোটের পর উদ্ধব বিজেপিকে ছেড়ে সহযোগী হিসেবে এনসিপি এবং কংগ্রেসকে বেছে নেওয়ার পরে শিন্ডে ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’ সরকারের নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হন। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব বিধান পরিষদের সদস্য হওয়ায় বিধানসভায় দলনেতার দায়িত্ব পান শিন্ডে।

যদিও সে সময় প্রাথমিক জল্পনা ছিল, বাবার আদর্শ অনুসরণ করে সরকার পরিচালনা দায়িত্ব নেবেন না উদ্ধব। মহারাষ্ট্রের কুর্সি যাবে ঠাণের নেতার কাছে। যদিও তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত সেই কুর্সিই নিলেন শিন্ডে। ছিনিয়ে নিলেন!

maharashtra Maharashtra Crisis Eknath Shinde Devendra Fadnavis Shiv Sena BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।