হোটেল থেকে উদ্ধারের পর চার এনসিপি বিধায়ক। ছবি: টুইটার থেকে
হিন্দি সিনেমার খাসতালুক মুম্বই। অনেকেই বলছেন, মহারাষ্ট্রে রাজ্যে সরকার গঠন নিয়ে যত নাটক-অতিনাটক, মুহুর্মুহু পট পরিবর্তন, ঘটনার যে ঘনঘটা চলছে, বলিউডের সিনেমেকারদের হাতেও তত মালমশলা নেই। শনিবারের পর ফের এক ভোররাতের নাটক। তবে এ বারের ‘অঙ্ক’ রাজ্যের বাইরে দিল্লির কাছে গুরুগ্রামে। সেখানকার একটি পাঁচতারা হোটেলে ‘নৈশ অভিযান’ চালিয়ে দলের চার বিধায়ককে ‘উদ্ধার’ করলেন এনসিপি ও শিবসেনার যুব নেতারা। এমনই দাবি দুই দলের।
এনসিপি-র অভিযোগ, বিজেপি জোর করে তাঁদের ওই চার বিধায়ক নরহরি ঝিরওয়াল, দৌলত দারোদা, অনিল পাতিল ও নিতিন পাওয়ারকে আটকে রেখেছিল হোটেলে। এর মধ্যে আবার দৌলত দারোদার নামে নিখোঁজ ডায়েরিও হয়েছিল। উদ্ধার করতে গেলে বিজেপি কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে এনসিপি-শিবসেনার যুব শাখার কর্মীদের ধস্তাধস্তিও হয়। তাঁরা শরদ পওয়ার শিবিরের বলেই দাবি দলের যুব শাখার জাতীয় সভাপতি ধীরাজ শর্মার।
মুম্বইয়ে ফিরে দুলাল দারোদা ও অনিল পাতিল বলেন, ‘‘সবাই ভাবছিলেন আমরা পালিয়ে গিয়েছি। কিন্তু আমরা এখনও এনসিপিতে আছি। আমরা কোথাও যাইনি। আমরা শরদ পওয়ারের সঙ্গেই আছি।’’ অন্য দিকে শরদ পওয়ার শিবিরের দাবি, ৫৪ বিধায়কের মধ্যে এই চার জনকে ধরে অধিকাংশই এখন তাঁদের সঙ্গে। অজিত পওয়ারের সঙ্গে রয়েছেন হাতে গোনা দু’-তিন জন।
‘অভিযান’-এর বর্ণনা দিতে গিয়ে ধীরাজ জানান, স্থানীয় সূত্রে তাঁরা বিধায়কদের আটকে রাখার কথা জানতে পারেন। ওই হোটেলে রাত দেড়টা নাগাদ অভিযান চালান। কিন্তু পুলিশ ও বাউন্সাররা তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছিল না। কিন্তু কোনও ভাবে তাঁদের নজর এড়িয়ে কয়েক জন ভিতরে ঢুকে পড়েন। হোটেলের ৫১১৭ নম্বর রুমে ছিলেন বিধায়করা। কিন্তু এক বিজেপি নেতার মুখোমুখি হয়ে যাওয়ায় তিনি চিনে ফেলেন। তিনি পুলিশকে বলেন, দু’দলের কর্মীদের বাইরে বের করে দিতে। এর পরেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি।
আরও পডু়ন: মহারাষ্ট্রের আঁচ সংসদে, ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ লোকসভায় বললেন রাহুল, ভিতরে বাইরে বিক্ষোভ কংগ্রেসের
ধীরাজ বলেন, ‘‘চার বিধায়ক আমাদের বলেছেন, তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁরা পালানোর ছক কষছিলেন। শরদ পওয়ার বিজেপিকে সমর্থন করছেন এবং পওয়ারের নির্দেশেই তাঁদের হোটেলে থাকতে বলা হয়েছে বলে ভুল বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সংবাদমাধ্যমে সত্যিটা জানার পর দলের সঙ্গে যোগ দিতে চেয়েছিলেন।’’
উদ্ধারের পর রাত দুটো নাগাদ গুরুগ্রাম থেকে মুম্বইয়ে উড়িয়ে আনা হয় তিন বিধায়ককে। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ তিন বিধায়ক মুম্বই পৌঁছন এবং যে হোটেলে এনসিপি বিধায়করা রয়েছেন, সেই রেনেসাঁ হোটেলে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে আলাদা বিমানে মুম্বই আসেন নরহরি ঝিরওয়াল।
আরও পডু়ন: আস্থাভোট কবে? ফডণবীস সরকার গঠন কি বৈধ? শীর্ষ আদালত রায় জানাবে মঙ্গলবার
সেনা-এনসিপির অভিযোগ, শনিবার কয়েকজন বিদ্রোহী বিধায়ককে একটি বিশেষ বিমানে দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে যায় বিজেপি। যাত্রীদের তালিকা থেকেও সেটা স্পষ্ট হয়েছে। হোটেলে অভিযানের কথা জানিয়ে শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘বিজেপির ষড়যন্ত্র নিয়ে এই বিধায়করা যা জানিয়েছেন, তা দূর্ভাগ্যজনক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটাই প্রমাণ করে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য ওরা (বিজেপি) কতটা নীচে নামতে পারে। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ লক্ষণ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy