শিবাজি-বিতর্কের জেরে ক্ষুব্ধ শিন্ডে শিবির, সেই আবহেই বিতর্কিত মন্তব্য ফড়ণবীস-পত্নীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মরাঠী বীর ছত্রপতি শিবাজির সঙ্গে বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ীর তুলনা করে শাসক বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোটের অন্দরে টানাপড়েন তৈরি করেছেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠী প্রকাশ্যে রাজ্যপালের অপসারণের দাবি তোলায় পদ্ম-শিবির অস্বস্তিতে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কোশিয়ারির মন্তব্যকে সমর্থন করলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের স্ত্রী অমৃতা!
অমৃতা শুক্রবার বলেন, ‘‘আমি রাজ্যপালকে ব্যক্তিগত ভাবে জানি। মহারাষ্ট্রে আসার পর তিনি মরাঠী শিখেছেন। তিনি সত্যিই মরাঠীদের ভালবাসেন। আমি নিজেও বিষয়টি অনুভব করেছি। কিন্তু এমন অনেক বার হয়েছে যে তিনি একটি কথা বলেছেন, কিন্তু তার অন্য কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি মারাঠী হৃদয়ের মানুষ।’’
সম্প্রতি অওরঙ্গাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বরেণ্য মরাঠা ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ দিতে গিয়ে কোশিয়ারি বলেছিলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র বৈগ্রহিক চরিত্রের অভাব নেই। প্রাচীন যুগে ছিলেন ছত্রপতি শিবাজি। পরবর্তী সময়ে ভীমরাও অম্বেডকর। বর্তমান সময়ে নিতিন গডকড়ী।’’এর পরেই শিন্ডে শিবিরের বিধায়ক সঞ্জয় গায়কোয়াড় রাজ্যপাল পদ থেকে কোশিয়ারিকে সরানোর দাবি তুলে বলেন, ‘‘অম্বেডকর এবং নিতিনের সঙ্গে এক আসনে বসিয়ে মরাঠা জাতির আরাধ্য শিবাজি মহারাজের অবমাননা করছেন রাজ্যপাল।’’
উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনাও রাজ্যপালকে নিশানা করে বলে, ‘‘এই রাজ্যপাল হল অ্যামাজনের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রে পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের পার্সেল।’’ পরিস্থিতি সামলাতে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় হতে হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গডকড়ীকে। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আমাদের ঈশ্বর। এমনকি, বাবা-মায়ের চেয়েও শিবাজি আমাদের কাছে বেশি শ্রদ্ধেয়।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকলেও উপমুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস যে ভাবে সরকারের অন্দরে ক্ষমতার ‘ভরকেন্দ্র’ হয়ে উঠছেন, তাতে শাসকজোটের অন্দরে টানাপড়েন বাড়ছে। উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কোশিয়ারিকে শিবাজি-মন্তব্য নিয়ে শিন্ডেসেনার আক্রমণ তারই ইঙ্গিতবাহী। এই পরিস্থিতিতে অমৃতার মন্তব্যে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন জোটের অন্দরে টানাপড়েন আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy