Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

মেডিক্যাল বিল ঠেকাতে ভরসা এখন রাজ্যসভা

গত কাল এই বিলের বিরুদ্ধে রাজধানীর পথে নেমেছিলেন আইএমএ সদস্যেরা ও চিকিৎসকদের একাংশ। এইমস থেকে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী প্রতিবাদ মিছিল করেন।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

প্রতিবাদের মধ্যেই লোকসভায় গত কাল পাশ হয়ে গিয়েছে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) বিল। চিকিৎসক সংগঠনগুলি এবং বিরোধী শিবিরের ভরসা এখন রাজ্যসভা। ওই বিলের আপত্তিকর দিকগুলি সংসদের উচ্চকক্ষে অন্তত বদল করা হবে বলে তাদের আশা।

গত কাল এই বিলের বিরুদ্ধে রাজধানীর পথে নেমেছিলেন আইএমএ সদস্যেরা ও চিকিৎসকদের একাংশ। এইমস থেকে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী প্রতিবাদ মিছিল করেন। পুলিশের সঙ্গে হয় ধস্তাধস্তি। শ’তিনেক চিকিৎসককে গ্রেফতারও করা হয় কিছু ক্ষণের জন্য। আজ এইমসের ফেডারেশন অব রেসিডেন্ট ডক্টরস’ অ্যাসোসিসেশন (এফওআরডিএ ) এবং রেসিডেন্ট ডক্টরস’ অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ)-র চিকিৎসকেরা কাজ করেন কালো ব্যাজ পরে। দু’টি সংগঠনই বিলটিকে ‘অগণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী’ আখ্যা দিয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের দাবি, ‘‘চিকিৎসাকে কায়েমি স্বার্থান্বেষীদের কব্জা থেকে মুক্ত করতেই এটা মোদী সরকারের খুব বড় এক সংস্কার পদক্ষেপ।’’

সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ জানিয়েছিল বিলটির উপরে। সেগুলিকে উপেক্ষা করে চিকিৎসক সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর কিছু ধারা ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের। লোকসভায় কংগ্রেসের এন কে রাঘবন, তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মতো বিরোধী শিবিরের সাংসদেরাও কাল এই বিলের বিভিন্ন দিক নিয়ে আপত্তি জানান। সে সবও খারিজ হয়ে যায়। বিলটি লোকসভায় পাশ হয়েছে ২৬০-৪৮ ভোটে।

রাজ্যসভায় পাশ হয়ে এনএমসি বিল আইনে পরিণত হলে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া আর থাকবে না। তার জায়গা নেবে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। এটিও স্বাধীন সংস্থা হবে না। বিলের ৪৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও পরামর্শ বিনা প্রশ্নে মানতে বাধ্য থাকবে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। এইমসের আরডিএ সভাপতি অমরেন্দ্র মালহি ও সেখানকার ছাত্র সংগঠনের সভাপতি মুকুল কুমার, উভয়েরই আশা, ‘‘রাজ্যসভায় নিশ্চয়ই বিলটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন হবে।’’ উভয়েই এক সুরে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও গোটা চিকিৎসক সমাজের স্বশাসন ও গর্ব কিছু রাজনীতিক ও আমলার খামখেয়ালের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’

গ্রামে চিকিৎসকের ঘাটতি মেটানোর নাম করে ‘বিশেষ সার্টিফিকেট’ দিয়ে সাড়ে তিন লক্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মীকে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দেওয়ার অধিকার দেওয়ার কথা রয়েছে বিলের ৩২ নম্বর ধারায়। বিলটি নিয়ে চিকিৎসক সংগঠনগুলি এবং বিরোধীদের আপত্তির এটি একটি বড় কারণ। সরকার বলছে, ‘চিকিৎসকের অধীনে থেকেই সাধারণ কিছু রোগের ক্ষেত্রে মডার্ন মেডিসিন’ (অর্থাৎ অ্যলোপ্যাথি ওষুধও) দিতে পারবেন জনস্বাস্থ্য কর্মীরা। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল আর ভি অশোকনের কথায়, ‘‘এ তো হাতুড়েদের বৈধতা দিয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করা!’’

উঠেছে গ্রামের মানুষদের বঞ্চনার অভিযোগও। কারণ, গ্রামে চিকিৎসক কম। তাঁদের অনুপস্থিতিতে ওই জনস্বাস্ব্য কর্মীরাই কার্যত অ্যালোপ্যাথ হিসেবে চিকিৎসা করতে শুরু করবেন। যাঁদের উপরে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। আইএমএ-র জাতীয় সভাপতি শান্তনু সেনেরও আক্ষেপ, ‘‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে চিকিৎসক হয়েও দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

National Medical Commission Bill IMA Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy