দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। ছবি সৌজন্য টুইটার।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু কমিটির সকলেই একযোগে রাহুলের সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। সভাপতির হাল ধরার মতো তাঁর বিকল্প যে দলে নেই সে ইঙ্গিতও দেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, দলকে নতুন ভাবে গড়ে তোলার দায়িত্বও তুলে দেওয়া হয় রাহুলের হাতে। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, “রাহুল গাঁধী ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু তা সরাসরি খারিজ করে দেওয়া হয়।”শনিবার দিল্লিতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে সনিয়া গাঁধী, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা, মনমোহন সিংহ-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা ছিলেন। সেখানেই রাহুলকে দলের পুনর্গঠনের দায়িত্ব তুলে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।
রাহুল কি কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন, না কি ওই পদেই থাকবেন, লোকসভার ফল বেরনোর পর থেকেই এ নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। সেই জল্পনার পারদ আরও চড়ে শনিবার। গোটা রাজনৈতিক মহলে এ দিন সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয় ছিল রাহুলের পদত্যাগের বিষয়টি। কিন্তু সেই জল্পনায় দাঁড়ি টানে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সূত্রের খবর, বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে দলের ভরাডুবির বিষয়টি নিয়ে কাঁটাছেড়া হবে। কেন এমন ফল হল, কোথায় কোথায় ত্রুটি ছিল— সবই আলোচনায় উঠে আসতে পারে এই বৈঠকে।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪টি আসন। গত বারের তুলনায় এ বার টেনেটুনে আরও ৮টি আসন বাড়াতে পেরেছে তারা। দেশ জুড়ে যে মোদী বিরোধী ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন রাহুল, সেই প্রচেষ্টা থমকে গিয়েছে মোদী-শাহের কৌশলে। আগের বারের তুলনায় আরও ২১টি আসন বাড়িয়ে বিপুল জয় নিয়ে এসেছে বিজেপি। মোদী ম্যাজিকের কাছে পুরোপুরি ফ্লপ রাহুলের ‘চৈকিদার চোর হ্যায়’। ভোটের ফল দেখার পরই দলের বিপর্যয়ের দায় নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন রাহুল। দলীয় সূত্রে খবর, তার পরই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ছিলেন রাহুল গাঁধী। তাঁকে প্রশ্নও করা হয়েছিল, তা হলে কি এ বার সভাপতির পদ ছাড়তে চলেছেন রাহুল? এ প্রসঙ্গে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ওয়ার্কিং কমিটি ও আমার উপর বিষয়টা ছেড়ে দেওয়াই ভাল।”
আরও পড়ুন: তিনমূর্তির নীরব রণকৌশলেই তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি
আরও পড়ুন: কলকাতায় পিছিয়ে ৫০ কাউন্সিলর, মমতার বাড়ির ওয়ার্ডেও পদ্মে ঢাকল ঘাসফুল
রাহুলের এই উত্তরে জল্পনা বেড়েছে বই কমেনি। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমনও খবর ছড়িয়েছে, এই ‘সিদ্ধান্ত’ থেকে তাঁকে বিরত রাখতে না কি দলের নবীন নেতারা রাহুলকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাহুল ইস্তফা দেবেন কি না সেটা যেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, দলের কাছে তেমনই গুরুত্বপূর্ণ এ বারের ভোটে বিপর্যয়ের কারণ খোঁজার বিষয়টা। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল-সহ ১৭টি রাজ্যে পুরোপুরি ধরাশায়ী কংগ্রেস। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল যে ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার জয় কংগ্রেসকে লোকসভা নির্বাচনে লড়ার বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছিল, সেই তিন রাজ্যেই মোদী ঝড়ে উড়ে গিয়েছে রাহুলের ক্যারিশমা। ছত্তীসগঢ়ে ২টি, মধ্যপ্রদেশে ১টি এবং রাজস্থানে তো কোনও আসনই পায়নি কংগ্রেস। উল্লেখযোগ্য ফল বলতে তামিলনাড়ু ও পঞ্জাব, যেখানে কংগ্রেস আটটি করে আসন পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, যে উত্তরপ্রদেশে ভোট ধরে রাখতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে ময়দানে নামিয়ে বাজিমাত করতে চেয়েছিলেন রাহুল, প্রিয়ঙ্কা ম্যাজিকও সেখানে পুরোপুরি ফেল। রাহুল নিজেও হেরে গিয়েছেন কংগ্রেসের গড় অমেঠী থেকে। কেরলের ওয়েনাডে রাহুলের জয় ছিল কংগ্রেসের এই বিপর্যয়ের মধ্যে একমাত্র ‘সান্ত্বনা’! সূত্রের খবর, দলের ভরাডুবির পরেই উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, কর্নাটক— এই তিন রাজ্যের দলীয় প্রধান ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy