শিলচরে রাহুল গাঁধী। (ডান দিকে) লাতুরে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব। ১১ এপ্রিল প্রথম দফায় ৯১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবারই প্রচার শেষ হল ওই সব কেন্দ্রের।
ভোট শুরুর ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই উত্তরবঙ্গের পরে আজ ফের সরাসরি সেনার নামে ভোট চাইলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী এ দিন নতুন ভোটারদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘যে বীর জওয়ান বালাকোটে জঙ্গি শিবিরে হানা দিয়েছিলেন, আপনাদের প্রথম ভোট তাঁকে উৎসর্গ করা যায় কি? যে বীর জওয়ান পুলওয়ামায় শহিদ হয়েছেন, আপনাদের প্রথম ভোট তাঁকে উৎসর্গ করা যায় কি?’’
পাশাপাশি পাকিস্তানের জন্মের জন্য আজ কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী! সংবিধানের ৩৭০ ধারা জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
আজ প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরে কংগ্রেসের অভিযোগ, পাঁচ বছরে নিজের কোনও সাফল্য নেই বলেই মোদীকে এখন জওয়ানদের নামে ভোট চাইতে হচ্ছে। রুটিরুজির সমস্যা, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নজর ঘোরাতেই জওয়ান-পাকিস্তান-কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে উগ্র জাতীয়তাবাদ ও মেরুকরণের রাজনীতি করছেন মোদী। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা টুইটারে মোদীকে বিঁধে লিখেছেন, ‘‘আশা করি প্রথম ভোটাররা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করবেন, কেন বালাকোটে হামলার প্রয়োজন হল? কেন পুলওয়ামায় হামলা হল?’’ আর পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির কটাক্ষ, ‘‘আগেও বলেছি, এমসিসি আসলে মোদী কোড অব কন্ডাক্ট!’’
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি লিখে সিপিএমের নীলোৎপল বসু অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনীবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ভোট চাইতে সেনার প্রসঙ্গ টানা যাবে না বলে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি তা অমান্য করছেন। তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, বুধবার তাঁরাও এ বিষয়ে কমিশনে যাবেন। উত্তরবঙ্গে মোদী সেনার নামে ভোট চাওয়ার পরে কমিশনে নালিশ করেছিল তৃণমূল।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু কেন মোদী বারবার জওয়ান বা পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টানছেন? পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, নানা জনমত সমীক্ষায় ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে যে, বিজেপি এ বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। তাদের ভরসা করতে হবে এনডিএ-র অন্য শরিকদের উপরে। জনমত সমীক্ষাগুলি থেকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট। তা হল, ইউপিএ-র পাশাপাশি এসপি, বিএসপি, তৃণমূলের মতো দলগুলি সম্মিলিত ভাবে অনেক আসন পেয়ে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে। ভোটের পরে সরকার গড়ার মতো সংখ্যা না থাকলে এই দলগুলির সমর্থন চাইতেই পারে বিজেপি। তখন সমর্থনের বিনিময়ে সেই দল মোদীর বদলে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাইলে মোদীর আর গদিতে ফেরা হবে না। তাই মোদী বারবার জাতীয় সুরক্ষা, দেশপ্রেম, সন্ত্রাসবাদের তাস খেলছেন বলে দাবি পর্যবেক্ষকদের। কংগ্রেসের কটাক্ষ, এত দিন মোদী সব সমস্যার জন্য প্রয়াত জওহরলাল নেহরুকে দুষতেন। এখন নেহরুকে দুষে লাভ নেই দেখে সেনার নামে ভোট চাইছেন!
কংগ্রেসের সামনে চ্যালেঞ্জ হল, এই বিতর্ককে ফের বেকারি, নোট বাতিল, নীরব মোদীর কেলেঙ্কারি, রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গে ফিরিয়ে আনা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আজ তাই মোদীকে ফের মুখোমুখি বিতর্কে বসার জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। মোদীকে কটাক্ষ করে তাঁর টুইট, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, দুর্নীতি নিয়ে আমার সঙ্গে বিতর্কে ভয় পাচ্ছেন? আমি আপনার জন্য বিষয়টা সহজ করে দিচ্ছি। আগে থেকে বিষয় জানা থাকলে তৈরি হওয়া সহজ হবে। এক, রাফাল ও অনিল অম্বানী। দুই, নীরব মোদী। তিন, অমিত শাহ ও নোট বাতিল।’ কংগ্রেসের বক্তব্য, মোদী জওয়ানদের নামে ভোট চাইলেও নতুন ভোটারদের বোকা বানানো যাবে না। বছরে ২ কোটি চাকরির ফাঁকা প্রতিশ্রুতি বা চাকরি খোয়ানো তাঁরা ভুলবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy