Advertisement
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

বিতর্কে আসুন, মোদীকে ফের তির রাহুলের

কংগ্রেসের জমানায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জিকাল স্ট্রাইক প্রসঙ্গে মোদীর দাবি, সেটা ছিল ভিডিয়ো গেম!

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ১০:৪৪
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটের বাকি আর দু’দিন। আর ঠিক সেই সময়ে রাজধানীতে দলীয় সদর দফতরে বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। জানালেন, ফসলের দাম না পাওয়া, বেকারত্ব, দুর্নীতির মতো দেশের মৌলিক সমস্যাগুলি নিয়ে মোদীর সঙ্গে খোলাখুলি বিতর্কে অংশ নিতে তিনি প্রস্তুত। কিন্তু মোদীই এই বিষয়গুলি প্রচারে এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সম্যক জ্ঞানই নেই। তাঁর আশেপাশে যে সব বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তাঁদেরও তিনি কাজে লাগান না। আমি ওঁকে বলেছি যে আসুন বিতর্কে অংশ নিন। চাকরি, দুর্নীতি, কৃষি সমস্যা নিয়ে প্রকাশ্যে তর্ক করুন। অন্তত দশটা মিনিট সময় আমাকে দিন। যেখানে বলবেন সেখানে যাব। কেবল অনিল অম্বানীর বাড়ি ছাড়া!’’ রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগও আজ ফের তুলেছেন রাহুল। জবাবে রাহুলের প্রাক্তন ব্যবসায়িক অংশীদার কী ভাবে ২০১১ সালে স্করপেন ডুবোজাহাজ চুক্তির ‘অফসেট’ অংশীদার হয়েছিলেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন অরুণ জেটলি।

আজ সাংবাদিক বৈঠকে আগাগোড়া এমন আক্রমণাত্মক মেজাজেই ছিলেন রাহুল। কথা বলেছেন কংগ্রেসের ইস্তাহার থেকে ন্যায় প্রকল্প, রাফাল, মাসুদ আজহার—সব বিষয় নিয়েই। তাঁর দাবি, যে সব প্রকৃত সমস্যায় ভারত জর্জরিত তার কোনও উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী কোনও বক্তৃতায় করছেন না। কিন্তু সেনাদের বীরত্বকে নিজের করে নিয়ে বাহবা কুড়োনোর চেষ্টা করছেন। রাহুলের কথায়, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সেনারা পরম বীরত্বের সঙ্গে দেশকে রক্ষা করছেন। দুর্ধর্ষ কাজ করছেন তাঁরা। ভারত কোনও যুদ্ধে হারেনি। এখন ভোটের মুখে সেনাদের কৃতিত্বটা নিজে নিতে চাইছেন মোদীজী।’’ সম্প্রতি জইশ ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে রাজস্থানের প্রচারে বুক ঠুকেছেন নরেন্দ্র মোদী। আজ এ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়েছেন রাহুল। ‘‘মাসুদ আজহারকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছিল কে? কংগ্রেস পাঠিয়েছিল কি? কোন সরকার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সমঝোতা করেছে? কংগ্রেস তাকে পাকিস্তানে পাঠায়নি। ঘটনা হল কংগ্রেস নয়, বিজেপিই সমঝোতা করেছে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে।’’

কংগ্রেসের জমানায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জিকাল স্ট্রাইক প্রসঙ্গে মোদীর দাবি, সেটা ছিল ভিডিয়ো গেম! আজ কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, সেনাবাহিনীকে কার্যত অপমান করেছেন মোদী। রাহুলের বক্তব্য, ‘‘আমরা সেনা নিয়ে রাজনীতি করি না। সেনাবাহিনী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত সম্পত্তিও নয়।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নোট বাতিল এবং ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’-এর ফলে দেশবাসীর বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে রাহুলের দাবি, ‘ন্যায়’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ‘রিমনিটাইজ’ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের হাতে টাকা এলে তাঁরা খরচ করবেন। বাজারে টাকা আসবে। চাহিদা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।’’ রাফাল কাণ্ডে মোদী সরকারের অনিল অম্বানীকে বাড়তি সুবিধে দেওয়ার অভিযোগও আজ ফের তুলে আনেন রাহুল। তিনি জানান, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির কাছে এ নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু এ দিন প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে রাহুলকে নিশানা করেছেন অরুণ জেটলি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ব্যাকঅপস নামে একটি সংস্থার অংশীদার ছিলেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা। ওই সংস্থার অন্য অংশীদার উলরিক ম্যাকনাইট ইউপিএ জমানায় স্করপেন ডুবোজাহাজ চুক্তির অফসেট কন্ট্রাক্ট পান। তখন রাহুল প্রতিরক্ষা চুক্তিকে প্রভাবিত করতেন। এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।’’ রাহুলের জবাব ‘‘উলরিকের সঙ্গে আমার এক সময়ে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। প্রয়োজনে যে কেউ এ নিয়ে তদন্ত করে দেখতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE