Advertisement
২৫ জানুয়ারি ২০২৫

রাজনীতির বাজারে আমরা কমিক রিলিফ, বলছেন কুণাল

সেই ভিডিয়োতে তিনি আরও বলছেন, ‘‘অম্বানীর বাংলো যেন ভার্টিকাল বিকাশ!’’ ‘‘মোদীজির সমালোচনা করলে বলা হয় ধর্মবিরোধী। মোদীজিই কি তা হলে ধর্ম?’’ 

সুজিষ্ণু মাহাতো
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৯
Share: Save:

‘‘এয়ারপোর্টে আমাকে দেখে এক নেতা বললেন, কমেডি করো, রাজনীতি আমাদের হাতে ছাড়ো। আমি বললাম, ছেড়েছিলাম। তার পর দেখলাম আপনারাই কমেডি করছেন!’’

কুণাল কামরার স্ট্যান্ড-আপ কমেডির এই ক্লিপিংসও ভোটের বাজারে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই ভিডিয়োতে তিনি আরও বলছেন, ‘‘অম্বানীর বাংলো যেন ভার্টিকাল বিকাশ!’’ ‘‘মোদীজির সমালোচনা করলে বলা হয় ধর্মবিরোধী। মোদীজিই কি তা হলে ধর্ম?’’

তাঁর ব্যঙ্গ-বাণ থেকে রেহাই নেই অমিত শাহ, রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবালেরও। কৌতুকের বিষয় হচ্ছে দেশাত্মবোধ, ধর্মের নামে উন্মাদনা, রাফালের মতো দুর্নীতির অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে উন্নয়ন নিয়ে। এই ভোটে কি তবে তাঁর মতো স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন? মঙ্গলবার ফোনে কুণাল বললেন, ‘‘আমরা এই রাজনীতির বাজারে কমিক রিলিফ।’’

রাজনীতিকেই তবে বেছে নিলেন কেন কমেডির জন্য? কুণালের জবাব, ‘‘আগে বলা হত, রাজনীতি থেকে দূরে থাকা উচিত। কিন্তু ২০১৪-য় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে যে ভাবে বিরাট অংশের সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনে সরব হয়েছেন, তা আগে দেখা যায়নি। কোনও বিরোধী কথা বললেই সবাই মিলে রে রে করে তেড়ে ওঠেন। রাজনীতি এখন মূলস্রোতের আলোচনার বিষয়। তাই তা নিয়ে কমেডিও হচ্ছে।’’

কেবল কুণালই নন সমকালীন রাজনীতিকে বিদ্রুপ করে বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছেন অনেকেই। বরুণ গ্রোভার, রাহুল রাম ও সঞ্জয় রাজৌরার ‘অ্যায়সি ত্যায়সি ডেমোক্রেসি’ও ভীষণ ভাবে রাজনৈতিক। ভোটের মরসুমে তারা প্যারডি বেঁধেছে, ‘‘চুনাব কা মাহিনা হ্যায়, মচ গ্যয়া শোর/ ফির আয়া হ্যায় টাইম টু চুজ় হু উইল স্ক্রু আস মোর!’’ আছেন আরও অনেকেই।

এমন কৌতুকে আঘাত-আক্রমণ থাকলেও তা থাকে তির্যক ভাবে, বিদ্রুপের আড়ালে। তাই তা একাধারে বিনোদন করে এবং বার্তাও দেয় বলে মনে করেন বাংলায় স্ট্যান্ড-আপ কমিক, লেখক দীপাংশু আচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘এটা আমরা চ্যাপলিনের ক্ষেত্রেও দেখেছি। গোঁড়া রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিপরীতে এমন কৌতুক অনেকের পছন্দ হচ্ছে। কিন্তু ইন্টারনেট ভারতে এখনও অভিজাত মাধ্যম। গ্রামে-মফস্‌সলে পুরোপুরি পৌঁছয়নি। তাই সত্যিকার সামাজিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এগুলোর তেমন প্রভাব নেই।’’

তবে সীমিত প্রভাব থাকলেও কৌতুকের মোড়কে শাসক-পক্ষের সমালোচনা করার জন্য আক্রমণ আসে। বছরখানেক আগেই এ জন্য মুম্বইয়ে কুণাল কামরাকে ভাড়া বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। তা নিয়ে এ দিন কুণাল বলছেন, ‘‘ও সব নিয়ে আর ভাবি না। এগুলো জীবনের নানা অভিজ্ঞতা। পরে হয়তো এগুলো নিয়েও জোক তৈরি করব।’’ রাজনীতি নিয়ে ব্যঙ্গ হজম করার মানসিকতা যে অনেক সময়ই থাকে না তার প্রমাণ মিলেছে বারবারই। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে হাসান মিনহাজ়ের কমেডি-এপিসোডের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ট্রেন্ডিং হয় #বয়কটনেটফ্লিক্স।

শাসক পক্ষ বরাবরই ব্যঙ্গ, কৌতুককে আক্রমণ করে বলে মত কুণালের। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস আমলে সরকারের সমালোচনা করলে বলা হত সঙ্ঘি। এখন বলা হয় কংগ্রেসি। ব্যাপারটা একই।’’ কিন্তু শত বাধা সত্ত্বেও ব্যঙ্গকে আটকানো যাবে না বলে জানিয়ে দিচ্ছেন কুণাল। তাঁর কথায়, ‘‘সেন্সরশিপ, আক্রমণ যত বাড়বে কমেডিয়ানদের ব্যঙ্গ তত বুদ্ধিদীপ্ত, ক্ষুরধার হবে। মোদীর পরে রাহুল গাঁধী আসলেও আমরা লোককে হাসাবই। নরেন্দ্র মোদী বয়স্ক বলে তাঁকে মোদীজি বলি, রাহুলকে তো তা-ও বলার দরকার নেই!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ Comic Relief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy