—প্রতীকী চিত্র
নাগপুরে লকডাউন প্রমাণ করল, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার নিতে চলেছে। শুধু নাগপুরই নয়, মহারাষ্ট্রের একাধিক অঞ্চলে পূর্ণ লকডাউন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। মহারাষ্ট্রের মতো অবস্থা হতে পারে বাংলাতেও। কলকাতার হাসপাতালে উত্তরোত্তর বাড়ছে কোভিড রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে কলকাতার অবস্থাও অচিরেই খারাপ হতে পারে।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করা হচ্ছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহর। জরুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া বন্ধ থাকবে গোটা শহরই। মহারাষ্ট্রে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের বিষয়টি নজরে রেখেই এক সপ্তাহের এই লকডাউন ঘোষণা করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তবে বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করার সময় উদ্ধব আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, যে দিকে পরিস্থিতি যাচ্ছে তাতে আগামী দিনে মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশেও লকডাউন অনিবার্য। ঠাকরের এই ‘অনিবার্য’ ইঙ্গিতে নিয়েই আপাতত ভাবনায় পড়েছে মহারাষ্ট্র-সহ বাকি দেশ।
করোনা টিকাকরণ শুরু হওয়ার পরও মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৬৫৯ জন। যা দেশের মোট সংক্রমণের ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু নাগপুরে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮০০ জন। এ ছাড়া গত কয়েকদিনে কেরল, পঞ্জাব, কর্নাটক, গুজরাত এবং তামিলনাড়ুতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে দেশের মোট সংক্রমণের প্রায় ৮৬ শতাংশই এই ছয় রাজ্যে। দেশজুড়ে টিকাকরণ শুরু হওয়া সত্ত্বেও সংক্রমণের এই উর্ধ্বমুখী ধারা দেখে তাই নতুন করে লকডাউন আশঙ্কা ঘনিয়েছে দেশের অন্য রাজ্যেও।
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই করোনা টিকার প্রথম ডোজটি নিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ক্রমাগত বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর মত, ‘‘শীঘ্রই মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জায়গাতেও লকডাউন অনিবার্য হতে পারে। আগামী ক’য়েক দিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ আপাতত সংক্রমণ প্রতিরোধে ৭ দফা পরিকল্পনা নিয়ে কাজে নামছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। নতুন পরিকল্পনায় পরীক্ষা বাড়ানোতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী দিনে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে মহারাষ্ট্রের বাকি জেলাগুলি কী ধরনের পদক্ষেপ করবে, সেই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের হাতেই ছেড়েছেন উদ্ধব।
দু’দিন আগেই ‘জনতা কারফিউ’ জারি হয়েছিল মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায়। রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছিল প্রশাসন। তবে বাড়তে থাকা সংক্রমণের হার দেখে আর শুধু রাতের কারফিউয়ে কাজ হবে না বলেই মনে করেছে প্রশাসন। তাই দু’দিনের মধ্যে নাগপুর কমিশনারেটের অধীনে সমস্ত এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন জারি করেছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। নতুন নিয়মে ফল-সব্জির বাজার, দুধের দোকানের মতো জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সমস্ত দোকান বন্ধ থাকবে নাগপুরে।
বস্তুত, দেশেও করোনা সংক্রমণ সার্বিকভাবে বেড়েছে গত দু’দিনে। ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২২ হাজার ৮৫৪ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। যা গত দু’মাসে সবচেয়ে বেশি। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের হার দেশের মধ্যে এখনও সবচেয়ে বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy