—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রতি ‘আর্থিক বৈষম্যে’র অভিযোগে কেরল সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের সংঘাত এখন তুঙ্গে। এই আবহেই বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর, গন্ডগোল রুখতে ‘কেরল মডেল’ কার্যকর করার সুপারিশ করল জাতীয় আইন কমিশন। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রককে দেওয়া রিপোর্টে কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে, প্রতিবাদের সময়ে সম্পত্তি ভাঙচুর, জাতীয় সড়ক বা রেল অবরোধ রুখতে গোটা দেশে অভিন্ন আইন প্রণয়ন হোক এবং মূল কিছু ধারা কেন্দ্রের নতুন আইন ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’য় অন্তর্ভুক্ত হোক।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে বাম-শাসিত কেরলের বিজয়ন সরকারের হালফিলে যতই বিরোধ চলুক, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থির দেওয়া রিপোর্টে সরাসরি ‘কেরল মডেল’কে দৃষ্টান্তমূলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। কেরালা হাই কোর্টের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ক্ষেত্রে এখন দক্ষিণের ওই রাজ্যে চালু আইনে রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তির সমান আর্থিক মূল্য জমা দিলে তবেই অভিযুক্তদের জামিনের আর্জি বিবেচিত হতে পারবে। ভাঙচুর হওয়া সম্পত্তির আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে আদালত সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এরই পাশাপাশি কেরলে চালু রয়েছে ‘ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি প্রতিরোধ এবং ক্ষতিপূরণ আইন’। বাম সরকার ওই আইন পাশ করিয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই আইনের সংস্থান অনুযায়ী, ব্যক্তিগত সম্পত্তি নষ্ট করা হলে তা সারিয়ে দেওয়ার টাকা অভিযুক্তকে দিতে হবে সম্পত্তির মালিকের কাছে। সরকারি ও ব্যক্তিগত, দু’ধরনের সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনা মোকাবিলার ক্ষেত্রেই কেরলের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করার সুপারিশ করেছে আইন কমিশন।
বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যেই সম্পত্তি ভাঙচুর প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যে দল বা সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, সেই সংগঠনের নেতৃত্বকে তার জন্য দায়ী করে তাঁদের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থাও থাকে অনেক ক্ষেত্রে। কেরলে বিষয়টি সরাসরি ক্ষতিপূরণের সঙ্গে সংযুক্ত। যে সম্পত্তি নষ্ট হবে, তার সমান অর্থ মূল্য অভিযুক্তকে দিতে হবে। সেই ব্যবস্থাই কেন্দ্রীয় ভাবে কার্যকর করতে চেয়ে সুপারিশ করেছে আইন কমিশন। জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কেরলের আইনমন্ত্রী পি রাজীবের কথায়, ‘‘প্রতিবাদের অধিকার গণতান্ত্রিক। প্রতিবাদের পথও হওয়া উচিত গণতান্ত্রিক। প্রতিবাদ করতে গিয়ে সরকারি বা কোনও নাগরিকের সম্পত্তি নষ্ট হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সেই কারণেই এমন ঘটনা মোকাবিলার ব্যবস্থা আইনে রাখা হয়েছে। তবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মনোভাব যে রকম অগণতান্ত্রিক, তাতে এমন আইনকে ভুল উদ্দেশ্যে ব্যবহারের আশঙ্কা থাকে! সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’’
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে মোদী বলেছিলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাল দৃষ্টান্ত নিয়েই তাঁরা ‘গুজরাত মডেল’ তৈরি করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সেই পথেই চলবেন। গুজরাতের পাশাপাশি কেরলও যদি কোনও ভাল কাজ করে থাকে, সেই উদাহরণ কাজে লাগাবেন। আইন কমিশনের সুপারিশে সেই মন্ত্রই গ্রহণ করা হল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy