প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা নরেন্দ্র মোদীর। মঙ্গলবার দিল্লিতে। পিটিআই
কোভিড অতিমারির জন্যই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য বাংলার মাটিতে হল না। আপশোস করছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, ‘‘গ্রামের বাড়িতে অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন। পরিবারের সঙ্গে জড়িত, এমন অনেকে রয়েছেন। অতিমারি না-থাকলে আমরা অবশ্যই বাবার দেহ বাংলায় নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতাম।’’
আজ দুপুরে দিল্লির লোদী রোডের শ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রণববাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। দিল্লির সেনা হাসপাতালে ভর্তির পরে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাই কামানবাহী শকটের বদলে শবযানে করেই হাসপাতাল থেকে রাজাজি মার্গের বাসভবনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির দেহ নিয়ে আসা হয়। তার আগে গোটা এলাকা ‘স্যানিটাইজ়’ করা হয়।
প্রণববাবুর ১০ নম্বর বাংলোর অদূরেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজাজি মার্গে আসেন। ছবিতেই শ্রদ্ধা জানান সকলে। কফিনে শায়িত দেহ অন্য ঘরে রাখা ছিল। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা, রাজনাথ সিংহ, নির্মলা সীতারামনের মতো মন্ত্রীরা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী, অধীর চৌধুরী, গুলাম নবি আজাদ, আহমেদ পটেল, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি— শ্রদ্ধা জানান সবাই। সদ্য বিজেপিতে যাওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মেঝেতে বসে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম জানান। আসেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতও। তবে সদ্য হাসপাতাল থেকে ফেরা সনিয়া গাঁধী আসতে পারেননি।
সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এক ঘণ্টা সময় বরাদ্দ থাকলেও রাজাজি মার্গে ভিড় কমেনি। প্রণববাবুর সঙ্গে কাজ করা বহু নেতা বা তাঁদের পরিবার, বিভিন্ন মন্ত্রকের অফিসার, সেনা অফিসারেরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। আসেন সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণেও।
জওয়ানদের মিছিলের পিছনে শবযানে করেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। পিপিই কিট পরা কর্মীরাই কফিন নামান। অনেকে শ্মশানযাত্রী হতে চাইলেও অনুমতি পাননি। সে জন্য অভিজিৎ মার্জনা চেয়ে নেন। পিপিই পরেই তিনি সৎকারের কাজ করেন। ‘গার্ড অব অনার’ ও ‘গান স্যালুট’ দেওয়া হয় প্রয়াত রাষ্ট্রনেতাকে।
অভিজিৎ ও অন্যরা অস্থি বিসর্জনের জন্য হরিদ্বার গিয়েছেন। ১০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দিল্লির কালীবাড়িতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। এই কালীবাড়ির সংস্কার ও সংলগ্ন অতিথিশালা তৈরিতে প্রণববাবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে শোকপ্রস্তাব আনার পাশাপাশি দু’মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গত কাল বিকেল পৌনে ৬টার টুইটে বাবার মৃত্যুর খবর প্রথম দিয়েছিলেন অভিজিৎ। আজ সরকারের গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘জাতীয় জীবনে ছাপ রেখে’ গত কাল বিকেল সাড়ে ৪টেয় প্রয়াত হয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy