গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এনডিএ-র শরিক। এ বারও বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটে লড়ছে নীতীশ কুমারের দল জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)। কিন্তু ভোটের পর সম্পর্কে টানাপোড়েন। এনডিএর প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সরকার বা মন্ত্রিসভায় যাননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই সুযোগই কাজে লাগাতে এ বার উঠে পড়ে লাগল লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। নীতীশকে ফের মহাগঠবন্ধনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানালেন দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ। তবে নীতীশ শিবিরের পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনও কোনও সাড়া মেলেনি বলেই খবর।
নীতীশ কার্যত মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী শিবিরের মহাগঠবন্ধনের শরিক লালুপ্রসাদের আরজেডি, জিতনরাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (হাম) এবং কংগ্রেস ধরেই নিয়েছে, এনডিএ নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ এবং হতাশ নীতীশ। তাই এ বার তাঁকে ফের মহাগঠবন্ধনে ফেরার প্রস্তাব দিল আরজেডি। রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এ বার সময় হয়েছে মহাজোটে ফেরার। না হলে নীতীশকে শুধু ‘অপদস্থ’ এবং অপমানই করবে বিজেপি।’’
রঘুবংশ লালুপ্রসাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত আরজেডি শিবিরে। তাই মনে করা হচ্ছে লালুর ইঙ্গিতেই নীতীশকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এনডিএ এখন সাফল্যের শিখরে। অন্য দিকে বিরোধী শিবিরের হাতে কার্যত কিছুই নেই। বিহারের ৪০ আসনের মধ্যে মাত্র একটি। দল তৈরি হওয়ার পর এই প্রথম একটি আসনও পায়নি আরজেডি। এই পরিস্থিতিতে এনডিএ ছেড়ে বিরোধী শিবিরে যাওয়ার মতো বোকামি নীতীশ করবেন না, মত পর্যবেক্ষকদের।
সোমবারই একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন। কিন্তু সেখানেও এ নিয়ে নীতীশ কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর হাবেভাবে বোঝা গিয়েছে, এনডিএ নিয়ে তাঁর বিশেষ ক্ষোভ নেই। তবে জিতন বলেছেন, রাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু বা স্থায়ী বন্ধু বলে কিছু হয় না।
আরও পডু়ন: কাটমানি! ক্ষুব্ধ মমতা, ভোটের ফল বিশ্লেষণে বার্তা দলকেও
আরও পডু়ন: বিধায়কদের হাতে হাতে ঘরে ঘরে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী
আগের বারের চেয়েও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী সরকারের প্রত্যাবর্তনের পর বিজেপির সূত্র ছিল, শরিক দলের প্রতিটি দলের জন্য এক জন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু নীতীশের দাবি ছিল, মুড়ি-মুড়কির এক দর নয়— বরং আনুপাতিক হারে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, নীতীশ দু’জন মন্ত্রীর দাবি করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি তাতে রাজি হয়নি। তাই নিয়েই শুরু হয় টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত সরকার বা মন্ত্রিসভা কোনওটিতেই যোগ দেয়নি জেডিইউ। যদিও এনডিএ-বিরোধী কোনও ইঙ্গিতও করেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৭ সালে মহাজোট ছেড়ে এনডিএ-তে শামিল হন নীতীশ কুমার। কিন্তু গত দু’বছরে সরকারে থেকেও তাঁর দলকে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দেয়নি এনডিএ। নীতীশও এ নিয়ে দাবিদাওয়া করেননি। কিন্তু এ বার যেহেতু বিহারে জেডিইউ, বিজেপি এবং এলজেপি অর্থাৎ এনডিএ জোট ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে (তিন দলের মিলিত আসন সংখ্যা ৩৯), তাই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল, এ বার নীতীশের দলকে অন্তত দু’টি দফতর দিতে পারে বিজেপি। কিন্তু এনডিএ তথা বিজেপির সূত্র মেনে তা হয়নি। ফলে নীতীশের ক্ষোভের রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সক্রিয় হয়ে উঠল বিরোধী জোট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy