Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
lalit modi

lalit modi: ‘হিরের চামচ মুখে’ মোদীর ছবিতে মোদী এবং শাহ

সুস্মিতা সেনের সঙ্গে প্রেমের কথা ঘোষণা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢাক পেটানোর দিনেই অবশ্য একপ্রস্ত বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ললিত।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে নিজের এই ছবি টুইট করেন ললিত।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে নিজের এই ছবি টুইট করেন ললিত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ০৭:৫৩
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুরনো ছবি আর শ’পাঁচেক শব্দ খরচ করে ললিত মোদী বোঝালেন, তিনি ‘কে’।

এ-ও দাবি করলেন, তাঁর ঘুষ নেওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই। কারণ তিনি একটি হিরের চামচ মুখে করে পৃথিবীতে এসেছিলেন। ললিতের টুইট করা ছবিগুলির মধ্যে একটিকে নিয়ে হইহই। কারণ, সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আইপিএলের কোনও ডাগআউটের সামনে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বসে তিনি স্বয়ং। সন-তারিখ না থাকলেও এই ছবি সম্ভবত ললিত ২০০৮ থেকে ২০১০-এর মধ্যে আইপিএল চেয়ারম্যান থাকাকালীনই তোলা। বিরোধীদের অভিযোগ, জীবনের নানা ‘ওঠাপড়া’ সহজে কেন ললিতের গায়ে লাগে না, তিনিনিজেই ফের তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আর ললিত নিজে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন, দুনিয়ার কোনও আদালতই তাঁকে ‘পলাতক’ বলে ঘোষণা করেনি।

প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেনের সঙ্গে প্রেমের কথা ঘোষণা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢাক পেটানোর দিনেই অবশ্য একপ্রস্ত বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ললিত। টুইটারে সুস্মিতার যে প্রোফাইলকে তিনি ট্যাগ করেছিলেন, সেটি আদতে একটি প্যারডি অ্যাকাউন্ট বলে দাবি করেন কয়েক জন নেট-নাগরিক। কেউ কেউ সুস্মিতার আসল প্রোফাইলের লিঙ্ক দিয়ে দেন। কেউ আবার লেখেন, ‘আনন্দের আর সীমা নেই!’ ললিত আজ সেই জায়গা থেকেই সরাসরি সংবাদমাধ্যমকে বিঁধে দীর্ঘ পোস্ট লেখা শুরু করে বলেছেন, ‘‘তথাকথিত ভুল ট্যাগ করা নিয়ে মিডিয়া কেন আমার পিছনে লেগেছে! আমি ইনস্টায় দু’টো ছবি দিয়েছি। ট্যাগ একদম ঠিক আছে। আমার মনে হয় এখনও আমরা মধ্যযুগে বাস করছি, যেখানে ধরে নেওয়া হয় যে, দু’জন মানুষ বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না। সময় ও রসায়ন ঠিকঠাক হলে ম্যাজিকও ঘটে যেতে পারে না।’’

সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী থেকে প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কোনও উদাহরণই বাদ রাখেননি ললিত। অর্ণবের উদ্দেশে খানিক অসংসদীয় একটি শব্দ প্রয়োগ করে বলেছেন, সব সাংবাদিক এখন নাকি এখন তাঁর মতো হতে চাইছেন! কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প-সুলভ ভুয়ো খবরের বদলে তাঁদের উচিত, ঠিক খবরটা লেখা। নিজে বাঁচা এবং অন্যকে বাঁচতে দেওয়া। সুস্মিতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ঘোষণার পরেই ললিতের প্রয়াত স্ত্রী মিনালকে নিয়ে লেখালেখি হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। ললিতের বক্তব্য, ১২ বছর ধরে মিনাল তাঁর ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ ছিলেন। তিনি তাঁর মায়ের বন্ধু ছিলেন— এমন একটা কথা ছড়ানো হচ্ছে কায়েমি স্বার্থে। তাই এই ‘কাঁকড়ার মানসিকতা’ ছেড়ে সকলের উচিত, অন্য কেউ উন্নতি করলে তাতে খুশি হওয়া।

এর পরেই ললিত বোমাটা ফাটিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘আমি যতটা মাথা উঁচু করে রয়েছি, তা আপনাদের সাধ্যের বাইরে। যাঁরা আমাকে ‘পলাতক’ বলেন, দয়া করে বলবেন, কোন আদালত আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে? উত্তরটা আমিই দিচ্ছি। কোনও আদালতই করেনি। দেশকে আমার মতো উপহার দিতে পেরেছে, আমি ছাড়া এমন একটা লোক দেখান।’’ দেশের জন্য কী উপহার সাজিয়ে দিয়েছিলেন তিনি? ললিতের দাবি, তিনি যখন বিসিসিআইয়ে যোগ দেন, তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছিল ৪০ কোটি টাকা। আর যখন তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়, তখন সেই অঙ্কটাই বেড়ে হয়েছিল ৪৭,৬৮০ কোটি টাকা। ললিত লিখছেন, ‘‘২০০৮ সালে বলেছিলাম, আইপিএল-কে কোনও দিন মন্দা ছোঁবে না। সবাই হেসেছিল। আজ কে হাসছে?... ভাবছেন আমায় ‘পলাতক’ বললে আমার কিছু আসে-যায়? না! আমি হিরের চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি। আমি ঘুষ নিইনি, কখনও নেওয়ার দরকারও হয়নি। কোনও সরকারি সুবিধাও নিইনি।’’ এই পোস্ট টুইটারেও দিয়েছেন ললিত। সঙ্গে দিয়েছেন প্রচুর ছবি। কোনও ছবি পারিবারিক, কোনওটিতে তিনি মোদী-শাহ কিংবা দলাই লামা, যুবরাজ চার্লস অথবা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। স্পষ্টই বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি ‘কে’!

টুইটার-ইনস্টাগ্রামে পোস্ট সুস্মিতাও করেছেন। কিন্তু এক সময়ে ইংরেজিতে কবিতা লেখা প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীর সেই সব পোস্টের ভাষা অনেক স্নিগ্ধ আর বুদ্ধিদীপ্ত। ললিতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য এখনও তিনি করেননি। কয়েকটি প্রতিবেদনের লিঙ্ক শেয়ার করেছেন, যার একটির বিষয়বস্তু, অর্থবান প্রেমিকের বান্ধবীদের ‘গোল্ড ডিগার’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ। টাকা দেখে সম্পর্কে জড়ানো বোঝাতেই ব্যবহার হয় ওই শব্দ। ইমোজি-সহ সেই প্রতিবেদনের তারিফের পাশাপাশি একাধিক টুইটে সুস্মিতাহ্যাশট্যাগ দিয়ে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এমন এক মেয়ে, যে নিজেই নিজেকে তৈরি করেছে’। তুলনায় দীর্ঘ পোস্ট আছে তাঁর ইনস্টাগ্রামে। সুস্মিতা সেখানে লিখছেন,‘‘যে সব বন্ধুদের চিনিই না, তাঁরা আমার জীবন ও চরিত্র নিয়ে বড়সড় মতামত দিচ্ছেন। আমি সোনার থেকেও গভীরে কিছু খুঁড়ে বার করি। (সবাই জানে) হিরে আমার বরাবরের পছন্দ। আর হ্যাঁ, সেটা এখনও আমি নিজেই কিনি! ... ধার করা আলো নিয়ে কখনও বাঁচিনি, কারণ আমিইসূর্য।... দুগ্গা দুগ্গা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

lalit modi Amit Shah Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy