নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং শিবরাজ সিংহ চৌহান। — ফাইল চিত্র।
জল্পনা শুরু হয়েছিল সোমবার সকালেই। বিধানসভা ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশ বিজেপির কয়েক লক্ষ নেতা-কর্মীকে নিয়ে ‘কার্যকর্তা মহাকুম্ভ’ কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক বারও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নাম না নেওয়ায়। রাত গড়াতেই গভীর হল সেই জল্পনা। বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ সাত সাংসদ এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীর নাম ঘোষণার পরে।
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমল নাথ মঙ্গলবার সকালে সরাসরি সেই প্রশ্ন তুলে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপিকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের উপর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আস্থা হারিয়েছেন। তাই ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে এত জন সাংসদ এবং সর্বভারতীয় নেতাকে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছেন।’’ চলতি বছরের শেষে ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, মিজোরামের সঙ্গেই মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, সে রাজ্যে এ বার বিজেপিকে চাপে ফেলতে পারে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গত কয়েক মাসে একের পর এক বিজেপি নেতা, বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা তথা আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংহ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করুন। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য বিজেপির অনেক নেতাই যোগাযোগ করছেন।’’
সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির ৩৯ জনের দ্বিতীয় প্রার্থিতালিকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, প্রহ্লাদ পটেল এবং ফগ্গন সিংহ কুলস্তে ঠাঁই পেয়েছেন। মধ্যপ্রদেশ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তোমরের নাম অতীতে বেশ কয়েক বার ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে উঠে এসেছে। প্রহ্লাদ একদা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতীর অনুগামী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ২০০৪ সালে উমা বিজেপি ছেড়ে ভারতীয় জনশক্তি পার্টি গড়ার সময় প্রহ্লাদও তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন। অন্য দিকে, ২০০৯ সালে লোকসভায় আস্থা-ঘুষ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুলস্তেকে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ বার ভোটে জিতলে ওবিসি শিবরাজের স্থানে প্রভাবশালী রাজপুত নেতা তোমরকে বিজেপি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করতে পারে বলেও জল্পনা রয়েছে।
বস্তুত, মধ্যপ্রদেশে চাপের মুখে পড়েই বিজেপি এ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সাংসদদের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। এআইসিসির মুখপাত্র পবন খেড়ার প্রশ্ন, দু’দফায় প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করলেও বিজেপি ফের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে শিবরাজকে তুলে ধরবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করেনি? যদিও স্বয়ং শিবরাজ তাঁর প্রতি বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের আস্থাহীনতার প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝেই কংগ্রেস মিথ্যা প্রচারে নেমেছে। মধ্যপ্রদেশে এ বার নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy