কুরিয়েন জোসেফ.। —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ফৌজদারি অপরাধের মামলার শুনানি সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে হওয়া উচিত বলে মতপ্রকাশ করলেন শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ। পাশাপাশি, তাঁর বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করা আদালত অবমাননার একটি মামলায় প্রশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও তাঁকে আর্জি জানানোর সুযোগ দেওয়া হোক।
সুপ্রিম কোর্টে প্রশান্তের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দু’টি মামলা রয়েছে। তহেলকায় দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিচারপতিদের সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যকে নিয়ে ২০০৯ সালে একটি মামলা হয়। এ ছাড়া, বিচারপতিদের সম্পর্কে ওই আইনজীবীর করা দু’টি টুইট নিয়ে ফের একটি মামলা হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে শীর্ষ আদালত। শেষের মামলায় গত ১৪ অগস্ট দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে প্রশান্ত ভূষণকে। তবে তাঁর কী শাস্তি হবে, সে ব্যাপারে রায় এখনও আসেনি।
এই পরিস্থিতি প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফের যুক্তি, প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাকে ঘিরে অনেক আইনি প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উপরেও যার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। ফলে শুনানি সাংবিধানিক বেঞ্চেই হওয়া দরকার। কারণ, সাংবিধানিক ব্যাখার বিষয়টি যদি সামনে চলে আসে, সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ জন বিচারপতির বেঞ্চে মামলা আসা জরুরি। প্রাক্তন বিচারপতি জোসেফের মতে, আদালত অবমাননার এই মামলাগুলিতে শুধু দুই-একজন ব্যক্তির বিষয় জড়িয়ে নেই, বরং বিচারব্যবস্থার আরও বৃহত্তর বিষয় এর সঙ্গে জড়ানো। হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন সিএস কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, সেই সময়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সকলেরই মত ছিল, অন্তত সাত সদস্যের বেঞ্চের সামনে মামলার শুনানি হওয়া উচিত।
আদালত অবমাননার একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করার পরে বার অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া বলেছে, সমালোচনার সুযোগ দিলে সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা আরও বাড়বে। তবে প্রশান্তকে নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায়ের সমালোচনা যাঁরা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন বিচারপতি ও প্রাক্তন আমলাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সুযোগ পেলেই কেউ কেউ নাগরিক সমাজের নাম করে সুপ্রিম কোর্ট, সংসদ কিংবা নির্বাচন কমিশনের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির শিকড়ে আঘাত করতে নেমে পড়েন। এই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছিলেন তাঁরা। প্রায় ১০০ জন স্বাক্ষরকারীর মধ্যে রয়েছেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে আর ব্যাস, সিকিম হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি প্রমোদ কোহলিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy