পা দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন কেরলেন জিলুমোল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
জন্ম থেকেই হাত নেই তাঁর। কাঁধের পাশ থেকে বাকি অংশ খালি। তবু মনে ছিল অদম্য জেদ। যার জেরে দীর্ঘ ছ’বছর পরে এল সাফল্য। গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেলেন কেরলের জিলুমোল ম্যারিয়েট থমাস। ৩২ বছরের এই কন্যার নজির গোটা এশিয়া মহাদেশে প্রথম। গত বছর খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের হাত থেকে লাইসেন্স নিয়েছেন জিলুমোল।
জিলুমোল জানান, গাড়ি চালানো তাঁর ছোটবেলার স্বপ্ন। হাত না থাকলেও তিনি ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, চার চাকার গাড়ি ঝড়ের বেগে ছুটিয়ে নিয়ে চলেছেন দূরের উদ্দেশে। কিন্তু গাড়ি চালানোর প্রাথমিক উপকরণের মধ্যে যে দু’টি হাত অন্যতম, ছোটবেলার স্বপ্নে সে যুক্তি খাটেনি। বড় হওয়ার পরেও সেই যুক্তিকে স্বপ্নপূরণের পথে প্রতিবন্ধক হতে দিলেন না জিলুমোল। গাড়ি তিনি চালালেন, দু’হাত ছাড়াই চালালেন।
মারিয়া ড্রাইভিং স্কুল থেকে গাড়ি চালানো শেখেন জিলুমোল। ডান পা স্টিয়ারিংয়ে রেখে, বাঁ পা দিয়ে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। স্টিয়ারিংয়ে মোটামুটি হাত (পা) পাকিয়ে প্রথমে ইডুক্কী জেলায় আরটিও অফিসে গিয়ে লাইসেন্সের আবেদন করেন। সেখানে শুরুতেই ধাক্কা। লাইসেন্সের আবেদন খারিজ করে দেয় আরটিও দফতর।
আবেদন খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কেরল হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জিলুমোল। আদালতের হস্তক্ষেপের পর লাইসেন্সের পরীক্ষা দেন তরুণী। কিন্তু তাঁকে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি সে বারও। এর পর বাধ্য হয়ে জিলুমোল রাজ্যের প্রতিবন্ধী কমিশনের দ্বারস্থ হন। কমিশন জিলুমোলের স্বপক্ষে তুলে ধরে বিক্রম অগ্নিহোত্রীর উদাহরণ, যিনি ভারতের প্রথম হাতহীন ব্যক্তি হিসাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছিলেন। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে গাড়ি চালানোর আইনি অনুমতি পান জিলুমোল। তাঁর কথায়, ‘‘গতিশীলতাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। এখন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়ে আমি খুশি। জীবনের সবচেয়ে বড় বাধাকে অতিক্রম করতে পেরেছি।’’ জিলুমোলের একাগ্রতা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম দেশের অন্য অনেক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়ের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy