— প্রতীকী ছবি।
কথায় আছে, বার বার তিন বার। যদিও পর পর তিন বার লটারির টিকিট কিনে শিকে ছেড়েনি কোনও বার। তবুও আশায় ভর করে চতুর্থ বার সকলে মিলে চাঁদা দিয়ে ২৫০ টাকা খরচ করে কিনেছিলেন বাম্পার লটারির টিকিট। সেই টিকিটেই উঠল প্রথম পুরস্কার। কেরলের একটি পুরসভায় সামান্য বেতনের কাজ করা ১১ জন মহিলা পেয়ে গেলেন ১০ কোটি টাকা!
কেরলের মলপ্পুরমের পারাপ্পানগাডি পুরসভায় ‘হরিৎ কর্ম সেনা’ প্রকল্পে কাজ করেন মোট ৫৭ জন মহিলা। সামান্য বেতন। তাতেই কোনও ক্রমে চলে সংসার। কিন্তু অবস্থা ফেরানোর ইচ্ছে ষোলআনা। কিন্তু লটারির টিকিটের যা দাম, তা একা কারও পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। সে জন্যই এর আগে তিন বার নিজেরা চাঁদা দিয়ে একটি করে লটারির টিকিট কিনেছিলেন। কিন্তু ওঠেনি পুরস্কার। তবুও এ বার আবার টিকিট কেনার কথা ভাবছিলেন দলের ১১ জন মহিলা।
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ন’জন মহিলা দেন ২৫ টাকা করে। বাকি দু’জন দেন সাড়ে ১২ টাকা করে। মোট ২৫০ টাকা দিয়ে মহিলারা কিনে ফেলেন ‘মনসুন বাম্পার লটারি’-এর একটি টিকিট। কিন্তু টিকিটে যে পুরস্কার উঠবে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি রাধা, চন্দ্রিকা, বিন্দু, বেবিরা।
পারাপ্পানগাডির বাসিন্দা পার্বতী ওই ১১ জনের অন্যতম। তিনি জানাচ্ছেন, পুরস্কার পাওয়ার আশা করেননি একে বারেই। কারণ, এর আগে তিন বার টাকা খরচ করেও পুরস্কার জোটেনি। এ বার টিকিট কেনার পর শুনতে পান পালাক্কডের কোনও এজেন্সি থেকে নাকি প্রথম পুরস্কার উঠেছে। ফলে এ বারও যে হল না, বুঝে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই ভোলবদল! পার্বতী বলেন, ‘‘আমি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে ছেলে জানায়, একটি ফোন এসেছিল। তাতে টিকিটের নম্বর জানিয়ে বলা হয় সেই টিকিটটি আমি কিনেছি কি না। কারণ, সেই টিকিটেই পুরস্কার উঠেছে।’’
১১ জনের মধ্যে ন’জন দিয়েছিলেন ২৫ টাকা করে। আর বেবি এবং কুট্টিমালু নামে দুই মহিলা অত টাকা দিতে পারবেন না, তাই তাঁরা দেন সাড়ে ১২ টাকা করে। এ বার পুরস্কার পেলেন ১০ কোটি টাকা। পার্বতীরা জানিয়েছেন, সবাই যখন নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী চাঁদা দিয়ে টিকিট কেনা হয়েছে, তখন পুরস্কারের টাকারও সমান ভাগ হবে। কিন্তু কী করবেন পুরস্কারের টাকা দিয়ে? পার্বতীদের ঝটিতি জবাব, ‘‘ওই টাকাটা পেলে প্রথমে বাড়িটা মেরামত করব। তার পর বাচ্চাদের পড়াশোনার পিছনে খরচ। যা ধারদেনা আছে, সেটাও শোধ করব।’’ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, কেউ এক বারও নিজের জন্য টাকা খরচের কথা বলেননি। বরং পুরস্কারের টাকা যে পরিবারের পিছনেই ঢালবেন, তা-ও একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মহিলারা।
পার্বতীরা সবাই মিলে টিকিটটি নিয়ে স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই টাকা অনুমোদন হবে। তার পর করবাবদ কিছুটা অংশ কেটে তা তুলে দেওয়া হবে পুরস্কার প্রাপকদের হাতে। এটাই নিয়ম। সেই নিয়ম যথাযথ ভাবে মেনে চলেছেন কেরলের পুরসভার সামান্য বেতনের মহিলা কর্মীরা। এই খবর পেয়েছেন পারাপ্পানগাডি পুরসভার চেয়ারম্যান উসমান এ-ও। তিনি মহিলাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি জানিয়েছেন, পুরসভার যা আর্থিক সামর্থ তাতে কর্মীদের খুবই কম বেতনে কাজ করাতে হয়। বেতন কম পেলেও মহিলা কর্মীদের উদ্যম নজরকাড়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy