ঋণ না কি মাদকের নেশা? কেরলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ জনকে খুনের ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। যদিও তদন্তে এখনও পর্যন্ত ঋণের তত্ত্বের উপরেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেরল পুলিশের ২৫ জনের একটি দল মৃত্যু রহস্যের তদন্ত চালাচ্ছে। সংগ্রহ করা হয়েছে অভিযুক্তের রক্তের নমুনাও।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। ওই দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে তিরুঅনন্তপুরমের তিনটি পৃথক জায়গায় পাঁচ জনকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বছর তেইশের এক তরুণের বিরুদ্ধে। ষষ্ঠ জনকেও তিনি খুনের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই তরুণ ঘটনার সময়ে কোনও মাদক সেবন করেছিলেন কি না, তারও তদন্ত করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে ওই তরুণের পরিবারে আর্থিক সমস্যা ছিল। তিরুঅনন্তপুরম গ্রামীণ পুলিশ সুপার কেএস সুদর্শন জানান, অভিযুক্ত তরুণের বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। জেরায় তিনি জানান, পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণেই খুনগুলি করেছেন। তবে সেটিই একমাত্র কারণ কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ। বিভিন্ন ডিজিটাল নথিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
অভিযুক্ত মাদক সেবন করেছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মত্ত ছিলেন কি না বা মাদক সেবন করেছিলেন কি না, তা জানতে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। পাশাপাশি ওই পরিবার প্রায় ১১-১২ জনের থেকে টাকা ধার করেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ঋণের অঙ্ক ছিল প্রায় ৬৪ লক্ষ টাকা। অভিযুক্ত জেরায় জানিয়েছেন, তিনি ঠাকুরমার একটি সোনার চেন চুরি করেছিলেন। সেটি দিয়ে এক জনের থেকে ধার নেওয়া ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে ৪০ হাজার মিটিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণের বিদেশে ব্যবসা রয়েছে। অভিযুক্তের দাবি, ওই ব্যবসায় প্রচুর দেনায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। দেনা মেটানোর জন্য পরিবারের সদস্যদের থেকে সাহায্য চান। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেননি। সেই কারণেই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি অভিযুক্তের। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মা, ভাই, প্রেমিকা, ঠাকুরমা এবং দুই আত্মীয়ের উপর হামলা চালান অভিযুক্ত। ঘটনায় অভিযুক্তের মা জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। বাকি পাঁচ জনেরই মৃত্যু হয়েছে।