সোনা পাচার কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে এই স্বপ্না সুরেশের। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
৩০ কেজি সোনা পাচারের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় কেরলের রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের একাধিক অফিসারের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পিনারাই বিজয়ন সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এতটাই চাপে পড়েছেন যে, সোমবার নিজের অফিসের এক পদস্থ আইএএস অফিসারকে কর্তব্যরত অবস্থাতেই সরিয়ে দিতে বাধ্য হন। তাঁর চাকরির চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর।
গত ৪ জুলাই তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে ৩০ কেজি সোনা আটক করে শুল্ক দফতর। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলে তিরুঅনন্তপুরমে আসে ওই সোনা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিরুঅনন্তপুরমে সৌদি আরবের দূতাবাসের প্রাক্তন জনসংযোগ আধিকারিক সরিথ কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
কিন্তু ওই ঘটনায় নাম উঠে এসেছে স্বপ্না সুরেশ নামে এক মহিলা অফিসারের। ওই মহিলা অফিসার তিরুঅনন্তপুরমে আমিরশাহি দূতাবাসের লিয়াজোঁ অফিসার ছিলেন। তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দেখভাল করে, এমন একটি সংস্থাতেও কর্মরত ছিলেন। দফতরের অফিসারদের সূত্রে খবর, ওই সোনার কনসাইনমেন্টে স্বপ্না সুরেশের স্বার্থ জড়িত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এই স্বপ্না সুরেশের নামে আগেও পাচারের মতো অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় তেমন কিছু হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপির।পাশাপাশি নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এম শিবশঙ্করের। তাঁকেই সোমবার সকালে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: এ বার একগুচ্ছ চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে আমেরিকাও
এই স্বপ্না সুরেশের সূত্রেই মু্খ্যমন্ত্রীর দফতরকে টেনে এনেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনায় প্রথম অভিযোগ তোলেন কেরলের বিজেপি রাজ্য সভাপতি কে সুন্দরন। তার পর থেকেই নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতর। সুন্দরনের অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলাকে (স্বপ্না সুরেশ) কেন মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে ফোন করে সুরক্ষা দেওয়ার দাবি করা হয়েছিল? তাঁর বিরুদ্ধে আগে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি উচ্চ পদে কর্মরত? মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি সচিবের ফোন কলের ডিটেলস ঘাঁটলেই দেখা যাবে, কাকে কাকে তিনি ফোন করেছেন।’’
সোনা পাচারের অভিযোগ তাঁর দফতরের আধিকারিকের নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন কেরলের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, "সোনা পাচারের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। অভিযুক্তের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি সচিবের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এ বার এটা স্পষ্ট যে, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস এবং তাঁর সচিব এই ঘটনায় জড়িত।" প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, সৌদি আরবের কূটনৈতিক রক্ষাকবচের অপব্যবহার করা হয়েছে। প্রায় একই অভিযোগ তুলে ঘটনার নিন্দা করেছে আমিরশাহি দূতাবাসও।
আরও পড়ুন: খুন হওয়ার আগে হাতে লিখে রাখলেন গাড়ির নম্বর, কনস্টেবলের বুদ্ধিমত্তায় পাকড়াও দুষ্কৃতীরা
তবে কাউকে আড়াল করার অভিযোগ অস্বীকার করে উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন। সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, "কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর অফিসকে জড়ানোর চেষ্টা করছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতির অভিযোগও সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে। ওঁর বোঝা উচিত, শুল্ক দফতর ঘটনার তদন্ত করছে। কাউকেই আড়াল করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের গুরুত্ব কতটা, সেটা আমরা বুঝি।’’
কিন্তু তার পরেও বিরোধী শিবিরকে থামানো যায়নি। বরং আরও তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছেন নেতারা। তার উপর সোমবার সকালে ওই অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার পর কার্যত তাদের অভিযোগে মান্যতা পেয়েছে বলেই মনে করছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy