বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনুষ্ঠানে গিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি শেখর যাদবের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের আবহেই এ বার কর্নাটক হাই কোর্টের দুই বিচারপতি হাজির হলেন ‘অখিল কর্নাটক ব্রাহ্মণ মহাসভা’র দু’দিনের অনুষ্ঠানে। বিচারপতি কৃষ্ণ দীক্ষিত এবং বিচারপতি ভি শ্রীসানন্দ নামে ওই দুই বিচারপতির এ হেন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই ওই দুই বিচারপতির এই ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়টিকে সংবিধান-বিরোধী বলে মন্তব্য করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারদাবি তুলেছেন।
এর আগে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিচারপতি শেখর যাদব বলেছিলেন, ‘‘...বলতে আপত্তি নেই যে, এটা হিন্দুস্তান। সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছে অনুযায়ীই দেশ চলবে। এটাই আইন।’’ ওই মন্তব্যের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার কাছে একাধিক আইনজীবী আবেদন করলেও নিজের মন্তব্যে অটল থেকেছেন বিচারপতি যাদব। এই পরিস্থিতিতে কর্নাটকের ব্রাহ্মণ সংগঠনের অনুষ্ঠানে দুই বিচারপতির যোগ দেওয়ায় নতুন করে বিতর্ক বেধেছে। সূত্রের খবর, ওই অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রশংসা করতে গিয়ে দেশের সংবিধান রচনায় ব্রাহ্মণদের অবদান, অম্বেডকের নাম বদলের পিছনে এক ব্রাহ্মণের ভূমিকার কথা তোলার পাশাপাশি কলহনের রাজতরঙ্গিনী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গও তুলে ব্রাহ্মণ অবদানের কথা মনে করিয়ে দেন এক বিচারপতি। সেখানেই তিনি ‘সারে জঁহা সে অচ্ছা’ গানের রচয়িতা আলাম্মা ইকবালকে ‘কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ’ বলেও মন্তব্য করেন।
দু’দিনের এই সম্মেলনে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী এবং শোভা করন্দলাজের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই। তাঁদের মধ্যে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বি ওয়াই বিজয়েন্দ্র, বিজেপি নেতা আর অশোকা, রবি সুব্রহ্মনিয়া, সিকে রামমূর্তি উপস্থিত ছিলেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)