Advertisement
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Nirmala Sitharaman

নির্বাচনী বন্ডে ‘তোলাবাজি’, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলার বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিল কর্নাটক হাই কোর্ট

কর্নাটকের ‘জনাধিকার সংঘর্ষ সংগঠন’-এর তরফে আদর্শ আইয়ার বেঙ্গালুরুর একটি আদালতে নির্মলা এবং কর্নাটক বিজেপির সভাপতি নলিনকুমার কাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলা আদায়ের অভিযোগ এনেছিলেন।

Karnataka HC stays probe against Union Finance Minister Nirmala Sitharaman in ‘extortion’ through electoral bonds case

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫০
Share: Save:

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলাবাজির মামলায় স্বস্তি পেলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শনিবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরুর যে নির্দেশ দিয়েছিল, সোমবার তার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট।

কর্নাটকের ‘জনাধিকার সংঘর্ষ সংগঠন’-এর তরফে আদর্শ আইয়ার নামে এক ব্যক্তি বেঙ্গালুরুর একটি আদালতে নির্মলা এবং কর্নাটক বিজেপির সভাপতি নলিনকুমার কাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলা আদায়ের অভিযোগ এনেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্য নির্মলা এবং সাংসদ নলিনের বিরুদ্ধে ওই নির্দেশ দিয়েছিল বেঙ্গালুরুর জনপ্রতিনিধি আদালত।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করেছিল শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে বন্ড কেনাবেচা সংক্রান্ত সব তথ্য প্রকাশ করতে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ও নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। ওই রায়ে নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হিসাবে দেখানো হয়েছিল বিষয়টিকে।

আবেদনকারীর দাবি, সেই ‘সুবিধা’ আসলে ‘তোলাবাজি’। তাই নির্মলা-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে বিশেষ জনপ্রতিনিধি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। এর আগে দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে জানিয়েছিল, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুবিধা পাওয়ার জন্য বন্ডের মাধ্যমে শাসক দলকে টাকা দিয়েছে কর্পোরেট সংস্থাগুলি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত গত ২ অগস্ট জানিয়েছিল, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া এবং নেওয়ার সময় তা ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বা ‘ক্ষতিকারক’ ছিল কি না, তা নিয়ে এখন তদন্ত হতে পারে না।

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে যে তিন ধরনের আর্থিক লেনদেনের ‘খোঁজ মিলেছে’ তা আদতে তোলাবাজি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই তিন ধরনের আর্থিক লেনদেনের মধ্যে প্রথম, কাজের বরাত, লাইসেন্স, কাজের অনুমতি পাওয়ার জন্য অনুদান। দ্বিতীয়, ইডি, আয়কর দফতর বা সিবিআইয়ের অভিযানের ঠিক আগে বন্ডে অনুদান দিয়েছে অনেক সংস্থা। অনেক ক্ষেত্রে অনুদানের বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণের কাজ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয়, সংস্থার পক্ষে অনুকূল নীতি তৈরির জন্য বন্ডে অনুদান।

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি ‘অসাংবিধানিক’ বললেও নির্বাচনী বন্ডের পক্ষে সওয়াল করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, ভোটে কালো টাকা ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই ওই ব্যবস্থা (নির্বাচনী বন্ড) চালু করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি সৎ প্রতিফলন দেখা যায়, সকলেই এক দিন এ নিয়ে অনুশোচনা করবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি কখনওই বলিনি একটি সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত। কিন্তু বিরোধী দলগুলি নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে।’’ অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটের আগে বলেছিলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ড আদৌ কোনও স্বচ্ছতার কর্মসূচি নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তোলাবাজির চক্র। আর নরেন্দ্র মোদী তার মাস্টারমাইন্ড (মূলচক্রী)।’’ নির্মলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের জন্য বিশেষ আদালতের নির্দেশের পর অভিযোগ মান্যতা পেয়েছে বলে দাবি করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু হাই কোর্টের নির্দেশের জেরে ধাক্কা খেল ধাক্কা খেল বিরোধীদের ‘সক্রিয়তা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE