কর্নাটক পুলিশের প্রাক্তন ডিজি ওমপ্রকাশের খুনের ঘটনায় নয়া তথ্য প্রকাশ্যে এল। খুন হওয়ার আগে অনলাইনে ফিশ ফ্রাই আনিয়েছিলেন কর্নাটক পুলিশের প্রাক্তন ডিজি। শুধু তা-ই নয়, মধ্যাহ্নভোজে নিজের পাতে দু’টি ফিশ ফ্রাই নিয়েছিলেন। একটু ভাত নেন। তার পর মধ্যাহ্নভোজ শুরু করেন। রবিবার তখন দুপুর আড়াইটে। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি ফিশ ফ্রাই এবং ভাত সবেমাত্র শেষ করেছিলেন, সেই সময় তাঁর স্ত্রী পল্লবী খাবার টেবিলের সামনে আসেন। অভিযোগ, খাওয়ার মাঝেই আচমকা ওমপ্রকাশের চোখেমুখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেন পল্লবী। তার পরই ছুরি নিয়ে হামলা করেন বলে অভিযোগ।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ডিজির ঘাড়ে ছুরি গেঁথে দেওয়া হয় প্রথমে। সেই অভিঘাতে চেয়ার থেকে পড়ে গেলে কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করা হয় তাঁকে। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে কোপানোর পর ১৫ মিনিট ধরে ছটফট করে করেছিলেন ওমপ্রকাশ। তাঁর দেহের পাশ থেকে দু’টি বোতল পাওয়া গিয়েছে। ঘরে যে জায়গায় প্রাক্তন ডিজির দেহ উদ্ধার হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে তদন্তকারীদের অনুমান, হামলা হতেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওমপ্রকাশ যাতে পালাতে না পারেন, তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে মেঝেতে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, তার পর প্রাক্তন ডিজির ঘাড়, কাঁধ, পেট, পিঠে একের পর এক ছুরি এবং বোতল দিয়ে আঘাত করা হয়।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুলিশ যখন পৌঁছোয় ডিজি ওমপ্রকাশের দেহের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী পল্লবী। ডিজির শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। তবে ডিজির কন্যা কৃতী ঘটনার সময় ওই ঘরেই ছিলেন, না কি তিনি বাড়ির চতুর্থ তলে ছিলেন, তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে পুলিশে। কারণ, পুলিশ যখন ডিজির বাড়ি পৌঁছোয়, তখন কৃতীকে বাড়ির চতুর্থ তলে দেখা গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ডিজিকে খুনের পর দু’জনকে ফোন করেছিলেন পল্লবী। তাঁদেরই এক জন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন আগে পল্লবী আইপিএস আধিকারিকদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছিলেন। ওমপ্রকাশের বিরুদ্ধে কন্যা এবং তাঁর উপর অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন পল্লবী। সেখানে তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, কন্যা কৃতীকে জোর করে মাদক খাওয়াতেন ওমপ্রকাশ। তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার করতেন। শুধু তা-ই নয়, এই সব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাঁদের দু’জনকে মানসিক রোগী বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করতেন। পল্লবীর আরও দাবি, ওমপ্রকাশ তাঁর পুত্র এবং পুত্রবধূকে সমর্থন করতেন। আর এই সব ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ। পুলিশ সূত্রে খবর, পল্লবীর দাবিগুলি আদৌ সত্য কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।