চলছে প্রশিক্ষণ। সোমবার কলাইকুন্ডায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
‘বাজপাখি’-র পিঠে সওয়ার হয়ে যুদ্ধের কৌশল শিখছেন ওঁরা। আবার প্রয়োজনে সেই ‘বাজপাখি’-কে হাতিয়ার করেই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বেন কলাইকুন্ডার বায়ুসেনা ঘাঁটির পাইলটেরা!
দেশের নিরাপত্তাকে জোরালো করতে এমনই কৌশল সাজিয়েছেন বায়ুসেনা কর্তারা। তাঁরা বলছেন, দেশের সব থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ-বিমান ‘হক’-এর দু’টি স্কোয়াড্রন রয়েছে কলাইকুন্ডা ঘাঁটিতে। অন্য স্কোয়াড্রন রয়েছে কর্নাটকের বিদারে। সে দিক থেকে আগামী দিনে দেশের বায়ুসেনার সব থেকে লড়াকু সেনাদের অন্যতম আঁতুড়ঘর এই ঘাঁটি। শত্রুশিবিরে হানা দিতে বা শত্রুপক্ষকে আটকাতেও দুই আসনের রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা ছোড়ায় দক্ষ এই বিমানকে ব্যবহার করা যায়। কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটির কম্যান্ডিং অফিসার এয়ার কমোডর রাজেশ পুরোহিত বলেন, ‘‘এমনিতে পাইলট প্রশিক্ষণই আমাদের কাজ। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে এই বিমানই লড়াইয়ে যেতে পারে।’’ বায়ুসেনার খবর, এই ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে বায়ুসেনার কম্যান্ডো বাহিনী ‘গরুড়’-এর একটি দলও। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো লড়াইয়ে তাদেরও কাজে লাগানো যেতে পারে।
বায়ুসেনা কর্তারা জানাচ্ছেন, যুদ্ধ বিমানের পাইলট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া অফিসারেরা প্রশিক্ষণের প্রাথমিক ধাপ পেরিয়ে তবেই ‘হক’-এর প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। আকাশে শত্রুপক্ষের বিমানকে ঘায়েল করা, শত্রুঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হানা বা বোমা ফেলার মতো প্রশিক্ষণ এই বিমানেই দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণে সফল হলে তবেই মিরাজ, জাগুয়ার বা সুখোই স্কোয়া়ড্রনে মোতায়েন করা হয়। ফলে শুধু দক্ষ পাইলট নন, বাজপাখির পিঠে শিক্ষানবিশরাও লড়াইয়ে সামিল হতে পারেন।
বিমানঘাঁটিগুলির মধ্যে এ রাজ্যের কলাইকুন্ডা অন্যতম প্রাচীন ঘাঁটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও একে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে শত্রুপক্ষের বিমান হানা দিয়েছিল এই ঘাঁটিতে। প্রাথমিক ধাক্কা সয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন এই ঘাঁটির পাইলটেরা। ১৯৭১-এর বাংলাদেশ যুদ্ধেও এই ঘাঁটির যুদ্ধবিমান হানা দিয়েছিল শত্রুশিবিরে। বর্তমানে চিনের বিপদের কথা মাথায় রেখে সেনা সূত্রের একাংশ বলছেন, শত্রু শিবিরের কাছে এই ঘাঁটি লক্ষ্য হতেই পারে। সে কথা মাথায় রেখেই এমন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
বায়ু সেনা সূত্র বলছে, কলাইকুন্ডায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অবশ্য নতুন নয়। এক সময় মিগ-২১ বিমানের ঘাঁটি ছিল কলাইকুন্ডা। সে সময় মিগ-২১ বিমানকে অবশ্য যুদ্ধের কাজ থেকে সরিয়ে শুধু মাত্র প্রশিক্ষণেই ব্যবহার করা হতো। কিন্তু তাতেও দুর্নাম ঘোচেনি তার। প্রশিক্ষণের সময়ই বারবার দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ‘উড়ন্ত কফিন’ তকমা জুটেছিল মিগ-২১ বিমানের। ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর এই ঘাঁটি থেকেই শেষ বারের মতো উড়েছিল মিগ-২১। সে সময় মিগ-২৭ বিমানের একটি স্কোয়াড্রনও মোতায়েন ছিল কলাইকুন্ডায়। ২০১৪ সালে মিগ পরিবারকে হটিয়ে কলাইকুন্ডায় পাকাপাকি ভাবে ঘাঁটি গাড়ে ‘বাজপাখি’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy