প্রতীকী ছবি।
আড়াই বছরেরও বেশি সময় ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটিয়ে ‘বিদেশি কাজলবালা’ বেরিয়ে এলেন ‘ভারতীয় কাজলবালা’ হয়েই। যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল তাঁকে জেলে ঢুকিয়েছিল, সেই একই ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর
মুক্তি দিল।
২ বছর ৮ মাস আগে ডিটেনশন ক্যাম্পে (পড়ুন জেলে) ঢোকার সময় ছেলেকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন, তিনিই কাল ‘ভারতীয়’ হয়ে বেরিয়ে এলেও তার মধ্যে কোনও উচ্ছ্বাসই ছিল না। নিজের মা-কেও যেন চিনতে পারছেন না, কখনও আবার তাঁকেই ছাড়তে চান না। সেই ছেলের দিকে অনেক ক্ষণ অপলকে তাকিয়ে রইলেন। একটি কথাও বললেন না। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কাজলবালার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসা চলছিল।
মা-কে নিয়ে এ বার কি তবে নতুন লড়াই ছেলে বাপন দেবের! মা’কে ভারতীয় প্রমাণের জন্য আড়াই বছর ধরে লড়াই চালাছেন তিনি। মা ‘বিদেশি’, এই তথ্য মানতে না পেরে হাইকোর্টে যান। হাইকোর্টের বিচারপতি মামলাটি ফের খতিয়ে দেখতে ট্রাইব্যুনালেই ফেরত পাঠান। নির্দেশ দেন, বাবা-মেয়ের সম্পর্ক প্রমাণ নিয়ে সন্তুষ্ট হতে না পারলেও ট্রাইব্যুনাল যেন মা-মেয়ের সম্পর্কটা খতিয়ে দেখে।
মণিপুরের জিরিবামে কাজলবালার বেড়ে ওঠা। বাবা কালীকুমার নম:শূদ্র, মা রেখাবালা নমঃশূদ্র। ১৮ বছর হওয়ার আগেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায় অসমের জিরিঘাটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অজিত দেবের সঙ্গে। কিন্তু স্বামীও অকালেই মারা যান। বহু কষ্টে ছেলেকে বড় করেন। আচমকা তাঁর নামেই ট্রাইব্যুনালের নোটিস আসে। লেখা, কাজলবালা দেব, স্বামীর নাম কালীকুমার দেব।
কাজলবালা কালীকুমার দেবের স্ত্রী নন, এ কথা জানানোর পরই তার রেহাই পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশি ঘোষণা করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠায়। বাবার নামে ১৯৭১ সালের জমির দলিল ছিল। কিন্তু সেখানে আবার নাম লেখা, কালীচরণ দেব। ট্রাইব্যুনাল তা দেখে বাবা-মেয়ের সম্পর্ক মানতে চায়নি।
হাইকোর্টের নতুন নির্দেশের পরে মা রেখারানি নমঃশূদ্র ট্রাইব্যুনালে দাঁড়িয়ে বলেন, কাজলবালা তাঁর মেয়ে। সাক্ষ্য দেন দুই প্রতিবেশীও। এর পরই ট্রাইব্যুনাল কাজলবালাকে ভারতীয় মেনে নিয়ে মুক্তির নির্দেশ দেয়।
জেল থেকে বেরিয়ে এলেন বটে, কিন্তু এ কি আর সেই আগের কাজলবালা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy