Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kafeel Khan

এনএসএ-তে আটক বেআইনি, কাফিলকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ আদালতের

কাফিলের মুক্তির নির্দেশের পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, বেআইনি ভাবে তাঁর বন্দিদশার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

কাফিল খান। —ফাইল চিত্র।

কাফিল খান। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:২৬
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের চিকিৎসক কাফিল খানকে ‘বেআইনি’ ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। মত ইলাহাবাদ হাইকোর্টের। সোমবার আদালতের নির্দেশ, কাফিল খানকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা এনএসএ)-র ধারা প্রত্যাহারেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গত ১০ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কাফিল খানের বিরুদ্ধে। আলিগড়ের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর ১৩ ফেব্রুয়ারি কাফিল খানের বিরুদ্ধে এনএসএ ধারা প্রয়োগ করা হয়। মাত্র তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার, গত ১৬ অগস্ট ওই ধারার আওতায় তাঁর বন্দিদশার মেয়াদ আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর পর বন্দি প্রত্যর্পণ আইনের আওতায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কাফিলের মা। ওই আবেদনের শুনানির পর এ দিন ইলাহাবাদের হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর এবং বিচারপতি সৌমিত্রদয়াল সিংহের বেঞ্চ রায়দান করে। কাফিলের মুক্তির নির্দেশের পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, বেআইনি ভাবে ওই বন্দিদশার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

১৩ ডিসেম্বর কাফিলের বিরুদ্ধে এফআইআরে অভিযোগ আনা হয়েছিল, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা ছাড়াও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন তিনি। এ দিন সেই এফআইআরেরও সমালোচনা করেছে আদালত। কাফিল খানের ভাষণে তেমন কোনও প্রচেষ্টাই দেখা যায়নি বলেও জানিয়েছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের মন্তব্য, “সম্পূর্ণ ভাষণটি পাঠের পর প্রাথমিক ভাবে তার দ্বারা বিদ্বেষ বা হিংসা ছড়ানোর কোনও প্রচেষ্টাই দেখা যায় না। আলিগড়ের শান্তি বা স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত করতে তা উদ্যতও নয়।” সেই সঙ্গে আলিগড়ের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের উদ্দেশে হাইকোর্টের কড়া বক্তব্য, “এটা মনে হচ্ছে যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কেবলমাত্র বাছাই করা অংশই পড়েছেন। এবং ভাষণের প্রকৃত বক্তব্য অবজ্ঞা করে কিছু বাছাই করা বাক্যাংশ উল্লেখ করেছেন।”

আরও পড়ুন: বিদায় প্রণব মুখোপাধ্যায়, ২২ দিনের যুদ্ধ শেষ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির

আরও পড়ুন: ভালবাসতেন, চোখের জলও ফেলিয়েছিলেন

জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষের বিপজ্জনক মনে করলে এনএসএ আইনেই আওতায় যে কোনও ব্যক্তিকে বিনা অভিযোগে ১২ মাসের জন্য আটকে রাখতে পারে পুলিশ। এ দিন কাফিল খানের উপর থেকে ওই আইনের ধারা প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও কাফিল খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে একটি সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কটে ৬০ জন শিশুমৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে সাসপেন্ড ও পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। যদিও অনেকের মতে, সে সময় শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন কাফিল। এমনকি, অন্যান্য হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন জোগাড় করেও এনেছিলেন তিনি। তা না হলে আরও শিশুর মৃত্যু হতে পারত বলেও মনে করেন অনেকে। গত সেপ্টেম্বরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের একটি রিপোর্টে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নিজের ভাষণের জেরে ফের নতুন করে কাঠগড়ায় ওঠেন কাফিল খান।

আরও পড়ুন: গত ৫০ বছরে তাঁর জীবন দেশের গত ৫০ বছরের ইতিহাস, প্রণব কন্যাকে চিঠি সনিয়ার

এই মুহূর্তে মথুরা জেলে রয়েছেন কাফিল খান। তাঁর মুক্তির দাবিতে নানা সময়েই সরব হয়েছে দেশের নাগরিক সমাজের একাংশ থেকে বামপন্থী দলগুলি। আদালতের নির্দেশে সেই দাবি পূরণ হল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy