বিচারপতি সুনীল গৌড়।
জল্পনাই সত্যি হল।
দিল্লি হাইকোর্টের যে বিচারপতি পি চিদম্বরমের আগাম জামিন খারিজ করে দিয়েছিলেন, সেই বিচারপতি সুনীল গৌড়কে অবসরের এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদে বসাতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুনীল গৌড়কে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করা হতে চলেছে।
সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে চিদম্বরমের আগাম জামিনের আর্জির শুনানি দিল্লি হাইকোর্টে জানুয়ারি মাসেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিচারপতি গৌড় সাত মাস রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন। তার পর আচমকাই গত সপ্তাহে তাঁর অবসরের তিন দিন আগে চিদম্বরমের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন তিনি। সিবিআই এর পর চিদম্বরমকে গ্রেফতার করে।
প্রথম থেকেই চিদম্বরম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় অমিত শাহের জেলে যাওয়া ও অমিতের আমলে চিদম্বরমের গ্রেফতারির মধ্যে যথেষ্ট মিল পাওয়া যাচ্ছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, অমিত শাহ কি প্রতিশোধ নিচ্ছেন! এ বার বিচারপতি গৌড়কে সরকারি পদ দেওয়া নিয়ে রাজনীতিকেরা বলছেন, এ হল ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ২০১০-এর জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি তরুণ চট্টোপাধ্যায় অবসরের ঠিক আগে সোহরাবুদ্দিন মামলায় সিবিআই তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই অমিতকে গ্রেফতার করা হয়। এ বারও বিচারপতি গৌড় অবসর নেওয়ার তিন দিন আগে চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
শুধু তা-ই নয়। নিজের রায়ে চিদম্বরমকে আইএনএক্স মিডিয়া কেলেঙ্কারিতে যড়যন্ত্রের কিংপিন আখ্যা দেন বিচারপতি গৌড়। যা নিয়ে চিদম্বরমের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তোলেন, তিনি ইডি-র নোট ‘কাট-অ্যান্ড-পেস্ট’ করে রায়ে তুলে দিয়েছেন। নিজের মাথা খাটাননি। এর আগে বিচারপতি গৌড়ই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া-রাহুল গাঁধীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই মামলায় একটি কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া জাতীয় রাজনৈতিক দলের সততা আতসকাচের নীচে রয়েছে।’’
তার পর থেকেই গুঞ্জন চলছিল, বিচারপতি গৌড়কে পিএমএলএ অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করা হতে পারে। চিদম্বরমের বিরুদ্ধে পিএমএলএ-তেই মামলা হয়েছে। তা ছাড়া, ওই ট্রাইব্যুনালের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি মনমোহন সিংহ সেপ্টেম্বরে অবসর নিচ্ছেন। অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্যি হতে চলেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র শামা মহম্মদের মন্তব্য, ‘‘গত বছর বিচারপতি সিক্রি অলোক বর্মার ভাগ্য নির্ধারণ করে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছিলেন। বিজেপি সরকারের আমলে বিচার বিভাগ কি নিজেকে বেচে দিয়েছে?’’
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ কে সিক্রি সিবিআই ডিরেক্টর পদ থেকে অলোক বর্মাকে সরানোর রায় দেন। তার পরে তাঁকে লন্ডনের কমনওয়েলথ সচিবালয়ের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ করে মোদী সরকার। কিন্তু বিতর্কের মুখে বিচারপতি সিক্রি সেই পদ প্রত্যাখান করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy