জুনের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে সাউথ ব্লকে। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, মনে হচ্ছে জুন মাসও ঢের দূরে! মোদী সরকারের মনোভাব, আরও আগে যদি আমেরিকার বিমান ধরা যেত, হয়তো কিছুটা স্বস্তিজনক হত!
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোলবদলের সঙ্গে তাল রাখতে পারছে না নয়াদিল্লি। তাই কিছুটা মরিয়া হয়েই চেষ্টা করা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব মোদীর সঙ্গে তাঁর সর্বোচ্চ স্তরের বৈঠক করানোর। যে চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়ে হোয়াইট হাউসে পা রেখেছিলেন ট্রাম্প, কয়েক মাসের মধ্যেই সেই অবস্থানের পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছে বিশ্ব রাজনীতি। কফিনে সাম্প্রতিক পেরেক মারার ঘটনাটি ঘটেছে গত কাল। ভারতের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চিনের যে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (ওবিওআর) প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছিল ট্রাম্প প্রশাসন, গত কাল ভোল পাল্টে বেজিং-এর সেই সম্মেলনেই প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা! তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই প্রকল্পটি কী ভাবে ভারতের তথা গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রশ্নে একটি বড় চ্যালেঞ্জ — এই মর্মে বিভিন্ন স্তরে আমেরিকার সঙ্গে দৌত্য চালিয়ে এসেছে ভারত। আর তাই, সেই প্রকল্পটির প্রথম সম্মেলনেই আমেরিকার অংশগ্রহণ আশঙ্কিত করেছে মোদী প্রশাসনকে।
অথচ হোয়াইট হাউসে আসার ছ’দিনের মাথায় মোদীকে ফোন করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘ভারতই আমেরিকার প্রকৃত বন্ধু।’’ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, ভারতের ঢের আগেই এপ্রিল মাসে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ওয়াশিংটনে পৌঁছে গেলেন। দীর্ঘ বৈঠক করলেন ট্রাম্পের সঙ্গে। বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির কথা হল। অথচ এখনও মোদীর আমেরিকা সফরের দিনক্ষণই স্থির করে উঠতে পারল না ভারত।
নয়াদিল্লির রক্তচাপ আরও বাড়ছে ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফরের সূচি দেখেও। শীঘ্রই সৌদি আরবের রাজার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে রিয়াধ যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেখানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন-আরব ইসলামিক সম্মেলন। ভারতের তীব্র অস্বস্তির কারণ, এই সম্মেলনে অতিথি হিসেবে রয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নাম। সূত্রের খবর, এই সম্মেলনের ফাঁকেই ট্রাম্পের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠক করার মরিয়া চেষ্টা করবেন নওয়াজ। দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশলগত রাজনীতিতে ভারতকে টেক্কা দেওয়ার এই সুযোগটি তিনি ছাড়তে চাইবেন না। সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের কর্তা ড্যানিয়েল কোটস আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলে ইসলামাবাদকে দুষেছেন। তাতে খুব একটা উল্লসিত নয় নয়াদিল্লি। দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নিজেদের স্বার্থেই পাকিস্তানকে কাজে লাগানোর যে নীতি নিয়ে চলে আমেরিকা, তার থেকে ট্রাম্প সরে আসবেন এমনটা মনে করছে না ভারত। মুখে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিলেও, ট্রাম্প এখনও এমন একটি পদক্ষেপও করেননি, যাতে সমস্যায় পড়ে ইসলামাবাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy