আবহবিদদের অনেকে একে ‘তৃতীয় মেরু’ বলে ডাকেন। সামরিক বিশেষজ্ঞেরা চিহ্নিত করেন ‘বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে। আদিকন্ত তুষার আর সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গের সারি দিয়ে ঘেরা সেই সিয়াচেনে এ বার ৫-জি ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু করতে চলেছে ভারতীয় সেনা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, মঙ্গলবার ১৫ জানুয়ারি) ‘সেনা দিবসে’ এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে।
প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, সিয়াচেনে মোতায়েন জওয়ান এবং অফিসারদের স্বার্থে একটি বেসরকারি টেলিকম কোম্পানির সহযোগিতায় চালু হচ্ছে ৪জি এবং ৫জি ইন্টারনেট পরিষেবা। সোমবারই পরীক্ষামূলক ভাবে সিয়াচেনে সেনার একটি ‘ফরোয়ার্ড পোস্টে’ চালু হয়েছে এই ব্যবস্থা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় প্রায় ২৭০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে থাকা সিয়াচেন হিমবাহ নিয়ে গত চার দশক ধরে ভারত-পাক সংঘাত চলছে। একাধিক বার রক্তাক্ত সংঘর্ষও হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সিয়াচেন হিমবাহ এবং আশপাশের এলাকায় তুলনামূলক ভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত।
আরও পড়ুন:
১৯৮৪ সালে সেনার ‘অপারেশন মেঘদূত’-এর পর থেকেই সলতোরো রিজের সবক’টি শৃঙ্গ ভারতের দখলে। যেখান থেকে গোটা নুব্রা উপত্যকার উপর নজর রাখা যায়। কার্গিল যুদ্ধের সময় এবং তার আগে-পরে পাক ফৌজ ওই সব এলাকা দখল করার বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভারত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় প্রতি বারই তারা ব্যর্থ হয়েছে। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, ইসলামাবাদ মুখে সিয়াচেন থেকে দু’তরফেরই সেনা সরানোর কথা বললেও ভারতীয় সেনা ওখান থেকে সরে এলেই তারা কার্গিলের কায়দায় ওই এলাকার দখল নিতে সক্রিয় হবে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, গুলি বিনিময়ে যত সেনা মারা যান, তার থেকে অনেক বেশি সেনার মৃত্যু হয় প্রকৃতির রোষে। অনেকে সারা জীবনের মতো পঙ্গু হয়ে যান। দেখা দেয় মানসিক সমস্যাও। দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা আগামী দিনে অনেক সেনার প্রাণরক্ষায় এবং মানসিক অবসাদের মোকাবিলায় সহায়ক হবে বলে মনে করছে সেনা।