Advertisement
E-Paper

ওয়াকফ আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে আশ্বাস-বার্তা নড্ডার

মুসলিম সংগঠন ও বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই গত সপ্তাহে সংসদে পাশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বিরোধীদের দাবি, ওই বিল সংবিধান বিরোধী। মুসলিমদের ধর্মাচরণে হাত দিতেই ওই বিল এনেছে সরকার।

জেপি নড্ডা।

জেপি নড্ডা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৩
Share
Save

সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়া ওয়াকফ বিলে গত কাল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু স্বাক্ষর করায় আইনে পরিণত হয়েছে ওই বিল। নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে আতঙ্কিত মুসলিম সমাজ। আজ বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে ফের একবার মুসলিম সমাজকে ভয় না পাওয়ার জন্য বার্তা দিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ বোর্ড বা বোর্ডের হাতে থাকা সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ করা কোনও ভাবেই কেন্দ্রের লক্ষ্য নয়। ওয়াকফ বোর্ড যাতে নিয়ম মেনে কাজ করে, সেটা নিশ্চিত করাই নতুন আইনের লক্ষ্য।’’

মুসলিম সংগঠন ও বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই গত সপ্তাহে সংসদে পাশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বিরোধীদের দাবি, ওই বিল সংবিধান বিরোধী। মুসলিমদের ধর্মাচরণে হাত দিতেই ওই বিল এনেছে সরকার। পাশাপাশি রাজ্যওয়াড়ি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে যে বিপুল পরিমাণে নথিবিহীন জমি রয়েছে তা হস্তগহত করাই সরকারের লক্ষ্য বলেই তাঁদের অভিযোগ। ওই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস, এমআইএম ও মুসলিম সংগঠনগুলি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে যাবে বিহারের বিরোধী দল আরজেডি-ও। এই আবহে আজ দলের চল্লিশতম প্রতিষ্ঠা দিবসে ওয়াকফ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে নড্ডা বলেন, ‘‘ওই আইন আদৌ ধর্মাচরণে কোনও প্রভাব ফেলবে না। কেবল ওয়াকফ বোর্ডগুলি যাতে নিয়মে চলে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘মুসলিমদের ওই সম্পত্তি গরিব মুসলিম, মহিলা ও অনাথ শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি শিক্ষা দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার কাজে ব্যবহার করা হবে।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, ওয়াকফ কাউন্সিলে সরকারের প্রভাব বজায় রাখতেই অ-মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাবতীয় বিতর্ক মেটানোর দায়িত্ব ওয়াকফ ট্রাইবুন্যালের থেকে কেড়ে প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর জবাবে নড্ডা বলেন, তুরস্কের মতো মুসলিম দেশেও ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারের অধীনে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর কথায়, ‘‘যারা বিলটি বুঝতে পেরেছেন, তারা জানেন বিলটি কী ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিম সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে আনা হয়েছে। যারা বিল পড়ে কিছু বুঝতে পারছেন না, তাঁরাই হট্টগোল পাকাচ্ছেন।

এ দিকে কেরলের কোচির মুনাবাম এলাকায় ওই বিল পাশ করানোর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বড় মাপের সাফল্য সভা করার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ওই এলাকায় ছ’শো খ্রিস্টান পরিবারের বাড়ি ওয়াকফ জমিতে বানানো হয়েছে বলে আচমকা ৪০০ একর দাবি করেছিল স্থানীয় রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড। জমি-বাড়ি বাঁচাতে ওয়াকফ বিলকে সমর্থন করে এগিয়ে আসে ‘ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব ইন্ডিয়া’। তাই ওয়াকফ আইন পাশ হওয়ায় পরে ওই এলাকাটিতেই সভার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। যার মাধ্যমে কেরলে আগামী দিনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি।

সঙ্ঘের মুখপত্রে ক্যাথলিকদের সম্পত্তি নিয়ে প্রবন্ধ বার হওয়ার পরে রাহুল গান্ধী সরব হয়ে বলেছিলেন, কেন্দ্রের নজর এ বার ক্যাথলিক সম্পত্তির দিকে। প্রবন্ধটি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও বিরোধীরা বিষয়টি ছেড়ে দিতে রাজি নন। আজ একই সুরে কথা বলেছেন উদ্ধব ঠাকরে। আসরে নেমে কেরলের বিজেপি সভাপতি রাজীব চন্দ্রশেখর দাবি করেছেন, প্রবন্ধটি ঠিক মনে না হওয়াতেই তা সরানো হয়েছে। প্রশ্নটা তাঁর মতে, জমির মালিকানা নিয়ে নয়। জমি জবরদখল নিয়ে। বিরোধীরা সেটাই গুলিয়ে দিতে চাইছেন বলে তাঁর অভিযোগ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

JP Nadda BJP WAQF Amendment Bill WAQF Amendment Law Muslim Community

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}