ছবি: সংগৃহীত।
তিহাড় জেলের ইতিহাসে এমনটা আর কখনও ঘটেনি। একসঙ্গে জেল থেকে উধাও আড়াইশো বন্দি! ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, মালা সিন্হারাও রয়েছেন সেই দলে! খোঁজ মিলছে না তাঁদেরও। ১৯৮৩-তে ইন্দিরা গাঁধীর জমানায় এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল জেএনউয়ের ছাত্র আন্দোলনের জেরে। জেলের প্রাক্তন মুখপাত্র সুনীল গুপ্ত ও সাংবাদিক সুনেত্রা চৌধুরীর বই ‘ব্ল্যাক ওয়ারেন্ট’-এ রয়েছে ওই বিবরণ।
সুনীল-সুনেত্রা লিখছেন, ৩৬ বছর আগে এপ্রিল নাগাদ আন্দোলন শুরু হয় জেএনএউয়ে। ভিসি পিএন শ্রীবাস্তব এক ছাত্রের হস্টেল বদল নিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ ছাত্ররা এতে ভিসি ও রেক্টরের বাসভবনের ফোন ও বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেন। দলমতের ভাগাভাগি ছেড়ে সেটা তখন সব ছাত্রছাত্রীদের এককাট্টা আন্দোলন। তাঁরা ঘেরাও করে রাখেন ভিসি ও শিক্ষকদের। তাঁদের উদ্ধার করতে ১৯৮৩-র ১০ মে ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকে। আগুন লাগানো ও দাঙ্গা করার অভিযোগে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে। এখনকার মতো দিল্লির পুলিশ তখনও কেন্দ্রের অধীনে। এবং ক্ষমতায় ইন্দিরা গাঁধীর সরকার। ছাত্রদের এমনই ‘বুদ্ধি’, গ্রেফতারের সময়ে কেউই নিজের ঠিক নামটি বলেননি। ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, মালা সিন্হা— যাঁর যা মনে এসেছে বলে দিয়েছেন। সেই নামই লেখা হয় পুলিশ ও জেলের খাতায়। ফলে ওই পড়ুয়ারা যখন জেল থেকে চম্পট দেন, তখন কোথায় ধর্মেন্দ্র, কোথায় হেমা, কাউকে খুঁজেই পায়নি পুলিশ!
‘ব্ল্যাক ওয়ারেন্ট’ বলছে, জেলে ওই পড়ুয়াদের রাখা হয়েছিল বি-ক্লাস অর্থাৎ উঁচু শ্রেণির বন্দি হিসেবে। যাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করা যেত। কোনও জাল বা গরাদের আড়াল থাকত না। দর্শনার্থীদের কব্জিতে শুধু কালির একটা ছাপ দিয়ে দেওয়া হত ঢোকার সময়। মে মাসের গরম। ঘামে ভেজা সেই ছাপ এক হাত থেকে অন্য হাতে ছেপে নেন পড়ুয়ারা। তার পরে আর সব দর্শনার্থীর ভিড়ে মিশে বেরিয়ে যান তিহাড়ের গেট পেরিয়ে। সে দিন যাঁরা জেল পালিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে পরে শুধু এক জনই ফিরে গিয়েছিলেন তিহাড়ে। জেলের সুপার হিসেবে।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে জোটে রাজি কংগ্রেস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy