Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

রডের জবাব সংবিধান, ফিরে বললেন ঐশী

ঐশী ঘোষ বলেন, ‘‘আই অ্যাম ব্যাক। লড়াই থেকে এক ইঞ্চিও পিছু হঠার প্রশ্ন নেই।”

সাংবাদিক বৈঠকে জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

সাংবাদিক বৈঠকে জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৫
Share: Save:

রডের আঘাতে মাথার হাঁ হয়ে যাওয়া অংশে সেলাই পড়েছে ১৫-১৬টি। বাঁ হাতে প্লাস্টার।

শিউরে ওঠার মতো আক্রমণের ২৪ ঘণ্টা পেরনোর আগেই সাংবাদিক বৈঠকে ঐশী ঘোষ আজ বললেন, ‘‘আই অ্যাম ব্যাক। লড়াই থেকে এক ইঞ্চিও পিছু হঠার প্রশ্ন নেই। বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবি না-মেটা পর্যন্ত তা চলবে।’’ শ্লেষ মিশিয়ে এ-ও যোগ করলেন, ‘‘ভয় দেখিয়ে জেএনইউয়ের জমি দখল কারও কর্ম নয়। ওদের মারের জবাব আমরা দেব বিতর্কে, বক্তৃতায়। ওরা যত রড হাতে তেড়ে আসবে, তত সংবিধানকে আঁকড়ে ধরব আমরা। ধর্ম-জাতের ভিত্তিতে এই ক্যাম্পাসে আঁচড় কাটার চেষ্টা রুখব। তাতে যা হয় হবে...।’’

ঐশী জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদের জেএনইউএসইউয়ের প্রেসিডেন্ট। ক্যাম্পাসে সর্বদা সঙ্গীদের পাশে থাকা ডাকাবুকো নেত্রী হিসেবেই পরিচিত। সেই ঐশী যখন এ দিন পড়ুয়াদের সামনে এলেন, স্লোগান উঠল, ‘‘কমরেড ঐশী কো লাল সেলাম।’’ চোখ চিক চিক করে উঠল বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার। কিন্তু মাইক ধরেই দুর্গাপুরের মেয়ে বললেন, ‘‘আমার নামে স্লোগানের কোনও প্রয়োজন নেই। বরং রোহিত ভেমুলার নাম মনে করুন।’’

ঐশী বলছিলেন, রবিবার ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মধ্যে কী ভাবে হামলার মুখে পড়েছিলেন তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা। সাবরমতী হস্টেলের কাছেই যে ক্যান্টিন, সেখানে একটি গাড়ির কাছে তাঁদের কী ভাবে মারা হয়েছে। যার সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে কাচ চুরমার হয়ে যাওয়া একটি গাড়ি। ঐশীর কথায়, ‘‘রড দিয়ে বার বার মাথায় মারা হয়েছে আমার। কালই বোন দেখা করতে এসেছিল। ও কোনওক্রমে বেঁচেছে। প্রাণে বেঁচে গিয়েছি সঙ্গীরা সময়মতো হাসপাতালে রক্ত নিয়ে গিয়েছিল বলে।’’ গোটা বক্তৃতায় ওই দু-এক বারই ‘আমি’। বাকিটা ‘আমরা’। ব্যথা নিশ্চয় আছে, কিন্তু যন্ত্রণায় মুখ কোঁচকাতে দেখা গেল না। গত রাতে অভিজ্ঞতার কথা বললেন। তাতে কোথাও আতঙ্কে কুঁকড়ে থাকা নেই। উল্টে শোনা গেল, ‘‘এবিভিপি শুনে রাখুক, এ ভাবে জেএনইউয়ের চরিত্র বদলে দিতে পারবে না তারা। আমার মাথায় রডের আঘাত মানে, যাঁরা আমাকে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট করেছেন, সেই সাড়ে ৮ হাজার পড়ুয়াকেও মারা।’’ ৭০ দিনের আন্দোলনে কখনও পুলিশের জিপের সামনে শুয়ে পড়েছেন ঐশী, কখনও বক্তৃতা করেছেন জিপের বনেটের উপরে দাঁড়িয়ে! তার পর আজকের ফিরে আসা! এক পড়ুয়া বলছিলেন, এই ক্যাম্পাসে জেল-ফেরত শাণিত বক্তৃতায় মোদীকে বিঁধেছিলেন জেএনইউএসইউয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কানহাইয়া কুমার। সীতারাম ইয়েচুরিও এই পদে থাকাকালীন ইন্দিরা গাঁধীকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেননি।

ঐতিহ্য!

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence Aishee Ghosh JNUSU President
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE