হেমন্ত সোরেন এবং তাঁর ভ্রাতৃবধূ সীতা সোরেন। ফাইল চিত্র।
আচমকাই দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ভ্রাতৃবধূ সীতা সোরেন। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে সীতার আচমকা এই পদত্যাগে ‘দলবদলের’ জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
দুমকা জেলার জামা কেন্দ্রের তিন বারের বিধায়ক সীতা জেএমএম প্রতিষ্ঠা শিবু সোরেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রয়াত দুর্গা সোরেনের স্ত্রী। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে লেখা চিঠিতে সীতা অভিযোগ তুলেছেন, স্বামী দুর্গার মৃত্যুর পর থেকে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে যথেষ্ট অন্যায় হয়েছে। তাঁদের অনবরত অসম্মান করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “পরিবার এবং দল থেকে আমাদের আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, যা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।” সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু এই দলকে তিলে তিলে আরও মজবুত করার জন্য তাঁর স্বামী যে কাজ করে গিয়েছিলেন, সেই ভূমিকাকেও স্বীকার করা হচ্ছে না বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন সীতা।
তিনি বলেন, “আজ দল যাঁদের হাতে, যাঁরা জেএমএমকে পরিচালনা করছেন, তাঁদের চিন্তাধারা, তাঁদের লক্ষ্যের সঙ্গে আমাদের নীতি এবং আদর্শ কোনও ভাবে খাপ খায় না।” সীতার আক্ষেপ, জেএমএম সুপ্রিমো শিবু সোরেন পরিবারের সব সদস্যকে এক ছাতার তলায় রাখার অনবরত চেষ্টা করে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি জানতে পেরেছেন, পিঠপিছে তিনি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আর এই সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই তিনি দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন।
হেমন্ত সক্রিয় রাজনীতিতে আসার আগে দুর্গা ছিলেন শিবুর রাজনৈতিক সহকারী। বিধানসভাতেও দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে দুর্গার মৃত্যুর পরে সক্রিয় রাজনীতিতে এসেছিলেন সীতা। রাজনীতিতে আসা ইস্তক বহুবার হেমন্তের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। জেএমএম সূত্রের খবর, মন্ত্রী না করায় দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন সীতা। দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করলে স্ত্রী কল্পনাকে রাঁচীর কুর্সিতে বসানোর পরিকল্পনা করেছিলেন হেমন্ত। কিন্তু দলের অন্তত চার জন বিধায়ক তাতে সরাসরি আপত্তি জানান। জেএমএমসূত্রে খবর, সেই ‘বিদ্রোহী’ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন হেমন্তেরই বৌদি তথা জেএমএম বিধায়ক সীতা সোরেন এবং আর এক ‘প্রভাবশালী’ চামরা লিন্ডা। শেষ পর্যন্ত সেই চাপের কাছে পিছু হটেই ‘নিরপেক্ষ’ চম্পাইয়ের হাতে রাঁচীর কুর্সি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হেমন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy