চম্পই সোরেন। —ফাইল ছবি
বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন না। আবার ভাসিয়ে রাখলেন রাজনৈতিক অবসরের সম্ভাবনাও। সব মিলিয়ে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রাখলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র নেতা চম্পই সোরেন।
রবিবার জেএমএমের ছয় বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন চম্পই। জল্পনা ছড়ায় যে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই দিল্লি গিয়েছেন হেমন্ত সোরেনের দলের এই প্রবীণ নেতা। তবে চম্পই জানিয়েছিলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে’ই তাঁর এই দিল্লি সফর।
চম্পইকে নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা জানালেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তিনটি বিকল্পের কথা জানান। তার একটি হল, রাজনীতি থেকে অবসরগ্রহণ। দ্বিতীয়টি হল, নিজে কোনও দল বা সংগঠন তৈরি করা। আর তৃতীয় এবং শেষটি হল, ‘নতুন পথে সঙ্গী’ পাওয়া গেলে, তাঁর সঙ্গেই বাকি পথটা হাঁটা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এই তৃতীয় বিকল্পের কথা উল্লেখ করেই চম্পই পরোক্ষে বিজেপির হাত ধরার বার্তা দিয়েছেন। তবে তিনি যে হেমন্তের দলে আর থাকবেন না, রবিবার বিকেলের পর তা এক প্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন চম্পই নিজেই।
‘গভীর যন্ত্রণা’ নিয়ে চম্পই লিখেছেন, “অনেক অপমান এবং লাঞ্ছনার পর আমাকে বিকল্প পথ বেছে নিতে বাধ্য করা হয়।” তার পরেই তিনি লেখেন, “আমার জীবনের নতুন একটি অধ্যায় আজ থেকে শুরু হতে চলেছে।” ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তিনটি বিকল্পই তাঁর সামনে খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চম্পই। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শেষেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।
গত ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেন তিনি। হেমন্তের অনুপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হন চম্পই। পাঁচ মাস রাঁচীর বিরসা মুন্ডা জেলে বন্দি থাকার পরে গত ২৮ জুন ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান হেমন্ত। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। পদ ছাড়তে হয় চম্পইকে। তবে তাঁকে রেখে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়। শোনা যাচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর পর দলের মধ্যেও নাকি কোণঠাসা চম্পই। হেমন্তের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্তকে চম্পই ভাল ভাবে নেননি, এমন খবরও ছড়ায়। শুরু হয় দলবদলের জল্পনাও।
সিংভূম তথা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে ‘টাইগার’ নামে পরিচিত চম্পই। রাজনীতিতে তাঁর উত্থান বেশ চমকপ্রদ। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার পরেই লেখাপড়ায় ইতি টেনে জেএমএম প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রাজনীতিতে। অবিভক্ত বিহার ভেঙে পৃথক আদিবাসী প্রধান রাজ্য ঝাড়খণ্ড গড়ার আন্দোলনে যোগ দেন চম্পই। গোটা সিংভূম অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা তিনি। ১৯৯১ সালে সেরাইকেলা আসনে উপনির্বাচনে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হন চম্পই। শিবুর দল এনডিএ-তে থাকাকালীন বিজেপি নেতা অর্জুন মুন্ডার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারে মন্ত্রীও হয়েছিলেন চম্পই। পরবর্তী সময়ে হেমন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী হলে আবার ক্যাবিনেটে ঠাঁই পান তিনি। সোরেনের মন্ত্রিসভায় খাদ্য এবং পরিবহণ মন্ত্রী ছিলেন চম্পই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy