উল্লাস: ঝাড়খণ্ডের ভোটে বিজেপির হারের পরে জোটের পতাকা নিয়ে পথে। সোমবার রাঁচীতে। ছবি: পিটিআই
জামশেদপুরের ইস্টবেঙ্গল কলোনির বাসিন্দারা এখনও তাঁদের জমির পাট্টা পাননি। পাট্টা পাননি পাশের পঞ্জাব কলোনি ও সিন্ধ্রি কলোনির বাসিন্দারাও।
দেশ ছাড়া হয়ে দু’পুরুষ আগে শহরের একধারে টাটা কারখানার জমিতেই বসতি তৈরি করেছিলেন এই সব কলোনির বাসিন্দারা। গত নির্বাচনে তাঁদের জমির পাট্টা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতে বিধায়ক এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন রঘুবর দাস। এলাকার বাসিন্দা এক বৃদ্ধ বলেছিলেন, ‘‘১৯৫০ সাল থেকে এখানে রয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উনি প্রতিশ্রুতি ভুলে গেলেন। এখন আবার শুনছি, কাগজপত্র না দেখালে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসকে ভোটে হারাতে এই সব এলাকায় চরকির ঘুরেছেন বিজেপিরই বিদ্রোহী প্রার্থী সরযূ রাই। তিনি বলছিলেন, ‘‘এই এলাকার ৮৬টি বস্তিতে প্রায় এক লক্ষেরও বেশি ভোটার রয়েছেন। এঁদের জমির পাট্টা দেওয়ার জন্য আমার লড়াই চলবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে ভোটে হারিয়ে জামশেদপুর থেকে জিতেছেন সরযূবাবু।
আরও পড়ুন: এনআরসি-সিএএ নিয়ে মুখে কুলুপ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনার ১৮টি আসনেও প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে পাকুড়, দুমকা, রাজমহল, শিকারিপাড়া, দুমকা এলাকায় বহু বাঙালি মুসলমানের বাস। এই সব এলাকায় সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে প্রচার করেছেন জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। হেমন্ত প্রচারে এসে জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে তিনি রাজ্যে সিএএ এবং এনআরসি চালু করতে দেবেন না। একই কথা বলে গিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাও। এই প্রচারে অনেকটাই কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারাই। দুমকার বিজেপি নেতা শিবলাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা লোককে ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। তাই এই সব এলাকার ১৮টি আসনের মধ্যে ১২টিতে জিতে গিয়েছে হেমন্তের জোট। সিএএ সামনে না থাকলে ফল এতটা খারাপ হত না।’’
আরও পড়ুন: মোদীর প্রচার ফেল, ঝাড়খণ্ডে ৮১-র মধ্যে ২৫ পেল বিজেপি
বিজেপি নেতারাও এখন মানছেন, রাজ্য জুড়ে আদিবাসী, ওবিসি-দের ক্ষোভ রয়েছে। পলামু থেকে শুরু করে সাঁওতাল পরগনা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ আদিবাসী গ্রামে গরিবি বেড়েছে। পাঁচ বছরে রাজ্যে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাইশ। গণপ্রহারে মৃত্যুর সংখ্যা চব্বিশ। পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট—সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়েছেন আদিবাসীরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিএএ-এনআরসি আতঙ্ক। কারণ, গরিব আদিবাসীদের অনেকের কাছেই নাগরিকত্ব প্রমাণের মতো কাগজপত্র নেই। তাই আদিবাসী সমাজও এনআরসি- নিয়ে চিন্তায় রয়েছে। হেমন্ত সোরেনের প্রতিশ্রুতি তাই তাঁদের অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে বলে মনে করেছেন এলাকার বিজেপি নেতারা। ভোটবাক্সেও তার প্রভাব দেখা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy