প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষা পিছোনোর আর্জি আগেই খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তার পরেও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মাথায় রেখে আপাতত তা মুলতুবি রাখার আবেদন শিক্ষা মন্ত্রকের কাছে জানাচ্ছিলেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। কিন্তু তাতে সায় না-দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল, সর্ব ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা (জেইই-মেন) এবং ডাক্তারি প্রবেশিকা (নিট-ইউজি) নেওয়া হবে পূর্ব ঘোষিত দিনেই। অর্থাৎ সেই অনুযায়ী, জেইই-মেন হওয়ার কথা ১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর। আর নিট-ইউজি ওই মাসেরই ১৩ তারিখে।
শুক্রবার দিনভর অপেক্ষার পরে এই বিষয়ে এক বিবৃতি জারি করে ওই দুই পরীক্ষার আয়োজক ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। সেখানে যুক্তি, সর্বোচ্চ আদালতই রায়ে জানিয়েছে যে, পরীক্ষায় বসতে না-পারলে, অনেক বড় মূল্য চোকাতে হবে পড়ুয়াদের। বিপদের মুখে পড়বে ভবিষ্যৎ। তাই পরীক্ষা পিছোনোর কোনও যুক্তি নেই। তবে অতিমারির কথা মাথায় রেখে তা হওয়া উচিত সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বন করে।
সাবধানতা অবলম্বনে যে কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না, বিবৃতিতে তা জানিয়েছে এনটিএ। যেমন, জেইই-মেনের ৯৯.০৭% পরীক্ষার্থীকেই সেন্টার দেওয়া হয়েছে তাঁর প্রথম পছন্দ মাফিক। যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে, বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন না-পড়ে। একই ভাবে, ৯৯.৮৭% নিট-ইউজি পরীক্ষার্থীও তাঁদের প্রথম পছন্দের পরীক্ষা কেন্দ্র পেয়েছেন। যাঁদের এখনও তা নিয়ে অসুবিধা রয়েছে, তাঁদের সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে এনটিএ-র দাবি।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভার উপনির্বাচনে যোগীরাজ্যে মুকুল?
আরও পড়ুন: গার্গলের জল থেকে সায় নমুনা সংগ্রহে
পরীক্ষা আয়োজক সংস্থাটি জানিয়েছে, দুই পরীক্ষাই নেওয়া হবে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা-সহ যাবতীয় সুরক্ষা বিধি মেনে। যে কারণে বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা। পরীক্ষার্থীদের কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, তা বিস্তারিত ভাবে লেখা লিখে দেওয়া হবে অ্যাডমিট কার্ডের সঙ্গে। যাঁরা পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে থাকবেন, করোনা-কালে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাঁদেরও।
এনটিএ এমন সাবধানতায় মুড়ে পরীক্ষার কথা বললেও, উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের একাংশ। যে কারণে ১৭ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট পরীক্ষা পিছোনোর আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পরেও শিক্ষা মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে সারা দেশে অতিমারির সংক্রমণ আগুনের মতো ছড়াচ্ছে, থেকে-থেকেই স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন জারি করতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য, সেখানে এমন সর্ব ভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় তাঁরা বসবেন কী ভাবে? কী ভাবেই বা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছবেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের পরীক্ষার্থী?
সম্প্রতি নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রচারে শিক্ষামন্ত্রী যে ই-আলোচনাতেই গিয়েছেন, সেখানেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠছে পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ, “এই করোনা-কালে জেইই, নিট পিছোনো হোক। আমাদের কথা ভাবুন।” এসএফআই, এআইএসএ, এনএসইউআইয়ের মতো ছাত্র সংগঠনগুলির দাবি, কেউ আমপানের শিকার। কেউ বানভাসি অসমে আটকে। কারও বাড়িতে এক বা একাধিক জন কোভিড আক্রান্ত। তাঁরা পরীক্ষা দেবেন কী করে?
এই অবস্থায় এ দিন সকালে অনেকে সামান্য আশার আলো দেখেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামীর টুইটে। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, এই দুই পরীক্ষা দীপাবলির পরে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে মন্ত্রক। চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকেও। কিন্তু দিনের শেষে সেই আশায় জল ঢেলে আপাতত সেপ্টেম্বরেই পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েছে এনটিএ। এর পরে সিভিল সার্ভিসের প্রাথমিক পরীক্ষা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষারও কী হয়— নজর এখন সে দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy