আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জেডিইউ। এ বার নীতীশ কুমারের দলেও পরিবারতন্ত্রের ছায়া। জল্পনা বিহারে ভোটের আগে জেডিইউ-তে যোগদান করতে পারেন নীতীশ-পুত্র নিশান্ত। এনডিএ শরিকেরা তো বটেই রাজনীতিতে আসার জল্পনা শুরু হওয়া নিশান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদবও।
উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি, বিহারে আরজেডি বা এলজেপি, আঞ্চলিক দলগুলিতে সর্বদাই পিতার হাত থেকে ব্যাটন গিয়েছে পুত্রের হাতে। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে জেডিইউ-তে একমাত্র নীতীশ-পুত্র এত দিন আগ্রহ দেখাননি রাজনীতিতে। ফলে নীতীশের পরে ক্ষমতা কার হাতে যাবে তা নিয়ে সংশয় ছিল দলের মধ্যেই। কিন্তু সম্প্রতি নিশান্ত পিতার সমর্থনে মুখ খোলায় তাঁর রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিহারে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে পিতা নীতীশ কুমারকে জেতানোর জন্য ইতিমধ্যেই বিহারবাসীর কাছে আবেদন করেন নিশান্ত। জেডিইউ সূত্রের মতে, প্রয়োজনে দলের হয়ে প্রচারে যেতে সম্মতি জানিয়েছেন নিশান্ত। তার পরেই নিশান্তের সমর্থনে পোস্টার পড়ে জেডিইউ দফতরে। প্রতিপক্ষের রাজনীতিতে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন তেজস্বী যাদব। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাইব বিহারের উন্নতির লক্ষ্যে রাজনীতিতে আসুক নিশান্ত। আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি পিতা নীতীশের দল ছেড়ে গরিব মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে আরজেডিতে যোগদান করুন নিশান্ত।’’ বিহারের নীতীশের দলের শরিক হাম দলের জিতনরাম মাঁঝীও স্বাগত জানিয়েছেন ওই সিদ্ধান্তকে। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের ছেলে চিকিৎসক, আমলার ছেলে আমলা হলে কোনও সমস্যা নেই। তাহলে কোনও রাজনীতিকের ছেলে রাজনীতিতে এলে এ নিয়ে বিতর্ক
কেন হয়!’’
প্রশ্ন হল নিশান্ত কী চাইছেন। তিনি যে রাজনীতিতে যোগদান করবেন এমন কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু একটি বিষয় স্পষ্ট নীতীশের সঙ্গে নিশান্তের যে দূরত্ব ছিল তা অনেকটাই কমেছে। কারণ গোড়া থেকেই মায়ের কাছে বড় হয়েছেন নিশান্ত। প্রায় দেড় দশক আগে স্ত্রীর মৃত্যুর পরে ছেলে নিশান্তকে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলেন নীতীশ। কিন্তু নিশান্ত রাজি হননি। সেই সময়ে কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল পিতা-পুত্রের। সেই জায়গা থেকে পিতা নীতীশের সমর্থনে মুখ খুলেছেন নিশান্ত। মাঝে মধ্যেই তাঁকে দলীয় দফতরে যাচ্ছেন দেখে রাজনীতিকদের মত, সম্ভবত রাজনীতিতে আসার প্রশ্নে ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন নিশান্ত।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)