Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jayalalithaa

‘এমন শোকস্তব্ধ চেহারায় চেন্নাইকে আগে দেখিনি’

চেন্নাইতে প্রায় ৩৫ বছর আছি। কিন্তু, এমন ভাবে গোটা শহরকে শোকে ডুবে যেতে আগে কখনও দেখিনি। শহর কেন, পুরো তামিলনাডু রাজ্যটাই তো ‘আম্মা’হারা হয়ে কাঁদছে! গ্রাম থেকে মফস্‌সল— ছুটে আসছে চেন্নাই শহরে।

বাস নেই, মানুষও নেই। ফাঁকা  টিনগর বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র।

বাস নেই, মানুষও নেই। ফাঁকা টিনগর বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র।

প্রদীপ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৪:৪২
Share: Save:

চেন্নাইতে প্রায় ৩৫ বছর আছি। কিন্তু, এমন ভাবে গোটা শহরকে শোকে ডুবে যেতে আগে কখনও দেখিনি। শহর কেন, পুরো তামিলনাডু রাজ্যটাই তো ‘আম্মা’হারা হয়ে কাঁদছে! গ্রাম থেকে মফস্‌সল— ছুটে আসছে চেন্নাই শহরে। শহরটা এক্কেবারে থমথমে। রাস্তাঘাট শুনশান। যত ভিড়, সব গিয়ে জমা হচ্ছে রাজাজি হলের সামনে। ভিড় না বলে জনসমুদ্র বলাই ভাল। সেখানেই আপাতত রাখা হয়েছে সদ্যপ্রয়াত জয়রাম জয়ললিতাকে। একটু পর এই সমুদ্রটাই এগিয়ে যাবে মারিনা বিচের দিকে। সেখানে বিকেল সাড়ে চারটেতে সমাধিস্থ করা হবে তাঁকে।

সোমবার মধ্য রাতের সামান্য আগেই টিভি থেকে খবরটা পেয়েছিলাম, জয়ললিতা আর নেই। গত কয়েক দিনের যাবতীয় জল্পনা শেষমেশ সত্যিই হয়ে গিয়েছিল। মাঝরাতেই তাঁকে পোয়েস গার্ডেনের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মঙ্গলবার সকালে রাজাজি হলে আনা হয় তাঁর দেহ। রাজ্যের জনপ্রিয় নেত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাই সকালেই বেরিয়ে পড়েছিলাম। মোটরবাইকে রাজাজি হল পৌঁছতে অন্য দিন মিনিট কুড়ি লাগে। কিন্তু, আজ রাস্তা এক্কেবারে ফাঁকা। তাই বাড়ি থেকে আট কিলোমিটার পথ যেতে মিনিট দশেকও লাগল না। রাজভবনের পাশেই রাজাজি হল। দু’য়ের মধ্যে দূরত্ব মেরেকেটে আধ কিলোমিটার হবে। কিন্তু, রাজভবন অবধি যাওয়ার পর আর এগোতে পারলাম না। বাইকটা রেখে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। ভিড়ে ভিড়াক্কার। পুলিশ আর এগোতেও দিল না। তাই ফিরে এলাম।

শহরের রাস্তা শুনসান। ভেলাচেরিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

যাওয়ার তাড়ায় খেয়াল করা হয়নি। কিন্তু, ফেরার পথে দেখলাম সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। একটা গাড়িও নেই। অটো, ট্যাক্সি, মোটরবাইক, বাস, ওলা-উবের— কিচ্ছু নেই। শপিং মল থেকে স্কুল-কলেজ, কর্পোরেট থেকে সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক— সব বন্ধ। এমনকী, সকালে বাড়িতে খবরের কাগজ বা দুধের প্যাকেট কিছুই আসেনি। নগরজীবন কার্যত স্তব্ধ। প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত রাজ্যবাসী তাঁকে এ ভাবেই শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। এক সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব পি রামামোহন রাও।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আম্মার সমর্থকরা। ছবি: পিটিআই।

এর আগে জয়ললিতা যখন জেলে গিয়েছিলেন বা কাবেরী জলবণ্টন ইস্যুতে গোটা রাজ্যকে কার্যত স্তব্ধ চেহারা নিতে দেখেছি। এমজি রামচন্দ্রনের মৃত্যুর সময়টা খুব একটা মনে নেই। পরে শুনেছি, সেই সময়েও এমনটা হয়েছিল। আজ রাজভবনের ওখানে ওই ভিড়ের কাছাকাছি গিয়ে দেখলাম, সাধারণ মানুষ কেঁদে ভাসাচ্ছেন। বুক-কপাল-মাথা চাপড়াচ্ছেন। ‘আম্মা’কে শেষ বারের জন্য দেখার আশায় কোথা থেকে না কোথা থেকে মানুষ এসেছে। এক জন জননেত্রী সাধারণ মানুষের কতটা মনের ভিতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন এ দৃশ্য তারই প্রমাণ।

আরও পড়ুন: বিদায় আম্মা, টুইটারে শোকপ্রকাশ হেভিওয়েটদের

আম্মা নেই, মধ্যরাতে চেন্নাইয়ে মানুষের ঢল

বিকেলে জয়ার শেষকৃত্য, চেন্নাইতে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী, লাইভ আপডেট

‘বহু বাধার বিরুদ্ধে লড়েছি, জয়াজির লড়াইটা বুঝি’

জয়ার রাজ্য নিয়ে জোর অঙ্ক দিল্লিতে

অন্য বিষয়গুলি:

Jayalalithaa Chennai shuts down
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy