Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জাঠেরা বিক্ষোভে, এ বার হুঁশিয়ার খট্টর

জাঠ আন্দোলনে ফের অশান্ত রোহতক। শিক্ষা ও চাকরিতে অবিলম্বে তাদের জন্য সংরক্ষণ চালু করার দাবিতে আজ সকাল থেকে রোহতক-পানীপত এলাকায় বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছে অখিল ভারতীয় জাঠ আরক্ষণ সংঘর্ষ সমিতি (এবিজেএএসএস)।

সংরক্ষণের দাবিতে সোনীপতে বিক্ষোভ জাঠেদের। রবিবার। ছবি: পিটিআই

সংরক্ষণের দাবিতে সোনীপতে বিক্ষোভ জাঠেদের। রবিবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০৩:৩৬
Share: Save:

জাঠ আন্দোলনে ফের অশান্ত রোহতক। শিক্ষা ও চাকরিতে অবিলম্বে তাদের জন্য সংরক্ষণ চালু করার দাবিতে আজ সকাল থেকে রোহতক-পানীপত এলাকায় বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছে অখিল ভারতীয় জাঠ আরক্ষণ সংঘর্ষ সমিতি (এবিজেএএসএস)। দাবি, সংরক্ষণ প্রশ্নে ১৫ দিনের মধ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে হবে মনোহরলাল খট্টর সরকারকে। কেন্দ্রের চিন্তা, মথুরা শান্ত হতে না হতেই হরিয়ানা ফের অশান্তির মুখে।

গত ফেব্রুয়ারিতে এই রোহতকেই জাঠ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। দাবানলের মতো যা ছড়িয়ে পড়ে হরিয়ানায়। সংঘর্ষে মারা যান অন্তত ৩০ জন। এ বার তাই রোহতকে বিক্ষোভ শুরু হতেই ঝুঁকি না নিয়ে রাজ্যের ন’টি জেলায় সতর্কবার্তা জারি করেছে খট্টর প্রশাসন। রোহতক জুড়ে জারি ১৪৪ ধারা। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রোহতক ও লাগোয়া জেলাগুলিতে। রোহতকের সঙ্গে ঝাজ্জর, সোনীপত, জিন্দ, ভিওয়ানি, হিসার, কৈথাল— সর্বত্র চলছে পুলিশি টহল। সাহায্য করছে ৭ হাজার আধাসেনা। তৈরি রয়েছে সেনাও। দিল্লির হরিয়ানা লাগোয়া অংশেও এখন ১৪৪ ধারা। সজাগ রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

গত ফেব্রুয়ারিতে জাঠ আন্দোলন মোকাবিলায় আধাসেনা নামাতে হয়েছিল বিজেপি-শাসিত এই রাজ্যে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে অচলাবস্থা, বিক্ষোভ। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান তিরিশ জন। পিছু হটে সরকার। শিক্ষা-চাকরি-সহ নানা ক্ষেত্রে জাঠেদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নির্দিষ্ট করতে ফেব্রুয়ারি মাসেই বিধানসভায় বিল আনে সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক সংরক্ষণ কখনওই ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা না মানায় জাঠ নেতাদের একাংশ তখনই বিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। উচ্চ আদালত গত সপ্তাহে ওই সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। স্থগিতাদেশ থাকাকালীন সংরক্ষণের কোনও সুবিধে জাঠেরা পাবেন না। এই ক্ষোভেই আজ রোহতক থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে জাসসিয়া গ্রামের কাছে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে এবিজেএএসএস। সংগঠনের রোহতক জেলার ভারপ্রাপ্ত নেতা অশোক বলহারার কথায়, ‘‘আমাদের মূল সমস্যা বেকারি। অন্য জাতের ছেলেরা কম নম্বর পেয়েও সংরক্ষণের জোরে স্কুল-কলেজে ভর্তি হচ্ছে, চাকরি পাচ্ছে। জাঠেরা খালি পিছিয়ে যাচ্ছে। ১৫ বছর ধরে আন্দোলন চলছে। দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’’

নতুন করে সংরক্ষণ-আন্দোলন মাথা চাড়া দেওয়ায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি এর আগে আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামলেছিল। এখন আবার জাঠেদের বোঝাতে ফের আসরে নেমেছেন বিজেপি নেতারা। সক্রিয় সঙ্ঘ পরিবারও। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট করে দেওয়া ৫০%-এর সীমার মধ্যে থেকে কী ভাবে আন্দোলনকারী জাঠেদের সামলানো যাবে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও দিশাও নেই সরকারের সামনে।

তবে গত বারের গোয়েন্দা ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্য সরকার এ বার গোড়া থেকেই সতর্ক। রোহতক হল প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার গড়। পিছন থেকে তিনিই ফেব্রুয়ারির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এ যাত্রায় তাঁকে নিষ্ক্রিয় রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। তাঁর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে শুরুতেই। খট্টর গত সপ্তাহেই জাঠ আন্দোলনের গতিপ্রকৃতির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। আধাসেনাকেও তখনই সতর্ক করে দেওয়া হয়। ফলে আজ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই মোতায়েন করা হয়েছে আধাসেনা। গত বার যা করতে চার দিন সময় লেগে গিয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Harayana Jats Police Quota
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE