Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Jamia

জামিয়া: প্রশ্নের মুখে পুলিশ, প্রতিবাদীও

প্রকাশ্যে মুখ না-খুললেও, পড়ুয়াদের একাংশ মানছেন যে, সামনে আসা ৪-৫টি ভিডিয়ো কিছুটা ‘অস্বস্তিতে’ ফেলেছে তাঁদের।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৬
Share: Save:

এক, দুই, তিন, চার...!

১৫ ডিসেম্বর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার লাইব্রেরিতে পুলিশের লাঠিচালনার ‘ফাঁস হওয়া’ সিসিটিভি ফুটেজের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই বিতর্ক জোরালো হচ্ছে।

গতকাল সকাল থেকে ৪-৫টি এমন ফুটেজ সামনে আসার পরে, এক পক্ষ বলছে, ক্যাম্পাসে লাইব্রেরির মধ্যে ঢুকে নির্মম ভাবে পড়ুয়াদের লাঠিপেটা করা পুলিশের সাজে কি? বিশেষত যেখানে ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, হাতজোড় করে ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন অনেকে। তেমনই অন্য পক্ষের প্রশ্ন, লাইব্রেরিতে ‘পুলিশকে দেখে বই টেনে বসা’ তরুণরা যে পড়ুয়া, তা প্রমাণ হল কী ভাবে? শুরু থেকেই দাবি করা হয়েছে যে, লাইব্রেরিতে চুপচাপ বসে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীদের উপরে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ এবং সিআরপিএফের জওয়ানরা। কিন্তু ভিডিয়োয় তো ঠিক উল্টো ছবি!

কাল প্রথম ফুটেজ সামনে আসার পরেই তা তুলে ধরে টুইটে পুলিশকে তুলোধোনা করেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। এ দিন লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলও। তার পাল্টা হিসেবে বিজেপির বক্তব্য, এক সময়ে বাটলা হাউসে জঙ্গির মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন সনিয়া গাঁধী। অথচ সেই অভিযানে নিহত সুরক্ষা কর্মীর মৃত্যুতে কিচ্ছুটি বলেননি। সম্প্রতি পুলওয়ামা-কাণ্ডের ফায়দা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গাঁধী। এখন ফের জামিয়া-কাণ্ডে পুলিশ-সিআরপিএফের নিন্দা করছেন প্রিয়ঙ্কা। ইঙ্গিত, ‘ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে’ নিরাপত্তা বাহিনী বা সুরক্ষা কর্মীদের নিশানা করে গাঁধী পরিবার।

প্রকাশ্যে মুখ না-খুললেও, পড়ুয়াদের একাংশ মানছেন যে, সামনে আসা ৪-৫টি ভিডিয়ো কিছুটা ‘অস্বস্তিতে’ ফেলেছে তাঁদের। কারণ, পড়ুয়াদের দাবি ছিল, লাইব্রেরিতে চুপচাপ বসে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীর উপরে নির্বিচারে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। দরজার সামনে চেয়ার-বেঞ্চ টেনে এনে পালানোর রাস্তা বন্ধও করে দিয়েছিল তারা। এ কথা বলা হয়েছিল জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও।

প্রশ্নের মুখে পুলিশ


• ভিতর থেকে পাথর যদি এসেও থাকে, লাইব্রেরিতে আগে দোষীদের কেন চিহ্নিত করল না পুলিশ? কেন নির্বিচারে লাঠি?
• সিসিটিভি ফুটেজে অনেকের মুখ স্পষ্ট। তাঁদের চিহ্নিত করতে গড়িমসি কিসের?
• গ্রেফতারের বদলে পড়ুয়াদের ভয় পাওয়াতেই কি বেপরোয়া লাঠি?

প্রশ্নের মুখে ছাত্রেরা


• বাইক-গাড়ি পুড়িয়েই কি অনেকে ঢুকেছিলেন লাইব্রেরিতে, ভান করেছিলেন পড়াশোনার?
• পুলিশ নয়, পড়ুয়ারাই দরজা বন্ধ করেছিলেন?
• ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে পুলিশকে পাথর ছোড়া হয়েছিল?

কিন্তু এখন ফুটেজ সামনে আসার পরে দেখা যাচ্ছে, পুলিশকে আসতে দেখে চটপট বই টেনে পড়ার ভান করছেন অনেকে। মুখে অনেকের রুমাল বাঁধা। এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে যে, দরজা খুলে বহু জনকে ঢুকিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাইব্রেরির ঘরে। কোথাও পুলিশের ঢোকা আটকাতে দরজার সামনে চেয়ার-বেঞ্চ জড়ো করছেন লাইব্রেরির ভিতরে থাকা তরুণ-তরুণীরাই। অভিযোগ উঠেছে, লাইব্রেরিতে যাঁরা ঢুকছেন, তাঁদের অন্তত এক জনের হাতে পাথর রয়েছে। সামনে বন্ধ বই নিয়ে বসে থাকা এক জনকে অন্য ফ্রেমে দেখা যাচ্ছে রাস্তার পাশে মোটরবাইকে আগুন দিতে।

পুলিশ গোড়া থেকেই দাবি করেছে, বার বার বলার পরেও ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে পাথর ছোড়া হয়েছে। রাস্তায় বাইক-গাড়ি পুড়িয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলেন অনেকে। তাঁদের ধাওয়া করেই সেখানে গিয়েছিল তারা। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুলিশের অভিযোগ ঠিক ছিল?

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক আহমেদ আজ়িমের বক্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে যে দলে-দলে পড়ুয়াদের লাইব্রেরিতে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে, সেই ভিডিয়ো এমফিল-পিএইচডির পড়ার ঘরের। সেখানে পুলিশের তাড়া খেয়েই তড়িঘড়ি ঢুকছেন পড়ুয়ারা। অনেকের মুখ বাঁধা কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে। তা ছাড়া, ফুটেজে এক ঝলক দেখেই হাতে পাথর কি না, বোঝা অসম্ভব। জানুয়ারিতেই সম্পূর্ণ ফুটেজ আমরা পুলিশকে দিয়েছি। তা দেখে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।’’ ফুটেজে হাতে কিছু থাকা লম্বা চুলের যুবককে অনেকেই হালে গুলি খাওয়া শাদাব বলে দাবি করছেন। তা ঠিক নয় বলেও আজ়িমের বক্তব্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Jamia Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy