প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, আদানি গোষ্ঠী বিদেশে ভুঁইফোড় সংস্থা খুলে তার পরে সেই সংস্থার মাধ্যমে এ দেশে নিজের শেয়ারে লগ্নি করে শেয়ারের দর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মরিশাস সফরের শেষে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলল, মোদী কি মরিশাস প্রশাসনের কাছে সে দেশে গৌতম আদানির বিষয়ে কোনও তথ্য চাইলেন? কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশের মন্তব্য, ‘‘আমাদের ভয় প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব পালন না করে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বাঁচানোরই চেষ্টা করবেন।’’
আদানিকে সুবিধা দিতে সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক পাকিস্তান সীমান্তের নিরাপত্তা বিধি শিথিল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে আজ লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির প্রশ্ন, গুজরাতের কচ্ছে পাক সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ তৈরিতে যে প্রকল্পের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার জন্য কি নিরাপত্তা বিধি শিথিল করা হয়েছে? কেন্দ্রীয় অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘‘যে প্রকল্পই হয়, তা কেন্দ্র, রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমতি, ছাড়পত্র নিয়েই হয়।’’
মন্ত্রীর উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে তৃণমূল বাদে কংগ্রেস, ডিএমকে-সহ বিরোধীরা লোকসভায় কক্ষত্যাগ করে। কংগ্রেসের অভিযোগ, কচ্ছে সীমান্তের একেবারে কাছে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ তৈরির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি কর্পোরেশনকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিয়ম বদলে জমি বরাদ্দ করেছিল। পরে গুজরাতের বিজেপি সরকার তা আদানি সংস্থাকে দিয়েছে।
জয়রাম বলেন, ‘‘আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, মরিশাসে ভুঁইফোড় সংস্থা কাজে লাগিয়ে আর্থিক নয়ছয় করেছে। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে চলা সেবি-র তদন্ত দু’মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। দু’বছর চলেছে। কারণ তদন্তকারীরা বিদেশ থেকে তথ্য পেতে ব্যর্থ হন। প্রধানমন্ত্রী মরিশাসে গিয়ে সেই তথ্য জোগাড়ের বদলে, নিজের বন্ধুদের বাঁচানোর চেষ্টা করবেন বলেই আশঙ্কা। আর সেই কারণেই ‘আদানি কেলেঙ্কারি’-তে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত জরুরি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)