কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান জয়রাম রমেশ। ফাইল চিত্র।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অনেক নেতাই পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে চলতে চান। সেই কংগ্রেসই আজ কেরলের সিপিএম-কে বিজেপি-র ‘এ টিম’ বলে নিশানা করল। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তুলনা করতেও পিছপা হলেন না কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান জয়রাম রমেশ। পিনারাই বিজয়নকে তিনি ‘মুন্ডু-মোদী’ বা মালয়ালি ধুতি (মুন্ডু) পরিহিত নরেন্দ্র মোদী বলে কটাক্ষ করেছেন।
প্রথম আক্রমণ অবশ্য সিপিএমের দিক থেকেই এসেছিল। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ রবিবারই তামিলনাড়ুর সীমানা পেরিয়ে কেরলে ঢুকেছে। কেরলে ১৮ দিন ধরে পদযাত্রা চলবে। তার পরে কর্নাটকে ঢুকবে। রবিবার রাতে তিরুঅনন্তপুরমের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেসের অংশগ্রহণকারীদের যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ দেখানোয়, কংগ্রেসকে ঠিকানা বদল করতে হয়েছিল। সোমবার সিপিএম টুইটারে রাহুলের কার্টুন-ছবি তুলে ধরে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলে, ‘১৮ দিন কেরলে, উত্তরপ্রদেশে মাত্র দু’দিন! বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে লড়াইয়ের আজব পন্থা!’
এর পরেই কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ বলেন, ‘হোমওয়ার্ক ভাল করে করা উচিত। কী ভাবে ভারত জোড়ো যাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা বোঝা উচিত। মুণ্ডু-মোদীর রাজ্যে এমন এক দল এই হাস্যকর সমালোচনা করছে, যারা বিজেপির এ টিম।’ কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, কংগ্রেসের পদযাত্রীরা কি কন্যাকুমারী থেকে কেরলের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে কর্নাটকে নামবেন? কেরলের মধ্যে দিয়ে ৫০০ কিলোমিটার হাঁটা পথ দু’তিন দিনে পার করা সম্ভব নয়। তার জন্য ১৮ দিনই লাগবে। কংগ্রেসের রিসার্চ সেলের নেতা অমিতাভ দুবের যুক্তি, পাঁচ মাসের ভারত জোড়ো যাত্রার মধ্যে ১৮ দিন কেরলে যাত্রা চলবে ঠিকই। কিন্তু চার মাস সময় কন্যাকুমারী, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হিমাচল, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে যাত্রা চলবে। এই সব এলাকায় বাম নয়, কংগ্রেসই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে।
রাষ্ট্রপতি-উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে সংসদে বিরোধী শিবিরে কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে সমন্বয় মসৃণ থেকেছে। তা সত্ত্বেও ভারত জোড়ো যাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই শিবিরের বিবাদের পরে প্রশ্ন উঠেছে, এতে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরছে না তো? জয়রাম রমেশের জবাব, “বিরোধী ঐক্যের অর্থ কংগ্রেসকে দুর্বল করা নয়। আমাদের শরিক, সম মনোভাবাপন্ন দলগুলিকে বুঝতে হবে, আমরা নিজেদের আর দুর্বল হতে দেব না। আমরা নিজেদের সংগঠন মজবুত করব। শক্তপোক্ত কংগ্রেস বিরোধী ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।”
কেরলের সিপিএম নেতৃত্বের মধ্যে রাহুল গান্ধীর সম্পর্কে অসন্তোষ অবশ্য নতুন নয়। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কেরলের ওয়েনাড ৃ থেকে রাহুল বামফ্রন্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়তে যাওয়ার পরেই বাম নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট হন। তার পরে ভারত জোড়ো যাত্রায় কেরলে গিয়ে তিরুঅনন্তপুরমে আদানিদের বন্দর ও সিলভার লাইন রেল প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাহুলের বৈঠককেও সিপিএম নেতারা ভাল চোখে দেখেননি। কংগ্রেস নেতারা বলছিলেন, কেরলে মূল লড়াই সিপিএম বনাম কংগ্রেসের হলেও ভারত জোড়ো যাত্রার লক্ষ্য কেরলের বিধানসভা নির্বাচন নয়। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, রবিবার রাতে তিরুঅনন্তপুরমে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেও কংগ্রেস তা নিয়ে সরব হয়নি। কিন্তু সিপিএম সরাসরি রাহুলকে নিশানা করায় কংগ্রেসকেও পাল্টা আক্রমণে যেতে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy