গাড়িভর্তি বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার সময়ে। পিটিআই
গত বছরের কায়দায় ফের দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গাড়ি বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা রুখে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করল সেনা ও পুলিশ। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিআরপি-র কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গির গাড়িবোমা হামলায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হন। তার জেরে সাময়িক লড়াই হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের বায়ুসেনার।
আজ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার জানান, এক সপ্তাহ ধরেই বাহিনীর উপরে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলার ছক নিয়ে তথ্য পাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। রমজান মাসের মধ্যেই এমন হামলার সম্ভাবনা ছিল।
কুমারের দাবি, গত কাল পুলওয়ামায় হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পান গোয়েন্দারা। ফলে সেনা, পুলিশ ও আধাসেনা পুলওয়ামায় বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট তৈরি করে।
আইজি-র বক্তব্য, ‘‘ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বরের একটি সাদা স্যান্ট্রো গাড়িতে হামলা চালানো হতে পারে বলে আমরা জানতে পেরেছিলাম। গত কাল বিকেলে পুলওয়ামায় একটি চেকপোস্টে তেমনই একটি গাড়ি দেখতে পায় বাহিনী। জওয়ানেরা চালককে সতর্ক করার জন্য শূন্যে কয়েক বার গুলি ছোড়েন। তাতে চালক গাড়ি ঘুরিয়ে পালিয়ে যায়।’’ পুলিশের দাবি, এর পরে রাতে রাজপোরা এলাকার আয়েগুন্ডের চেকপোস্টে ফের সেই গাড়িটি দেখে শূন্যে গুলি ছোড়ে পুলিশ। অন্ধকারের সুযোগে গাড়ি ছেড়ে পালায় চালক। জওয়ানেরা আলো জ্বেলে দেখতে পান, গাড়ির মধ্যে সন্দেহজনক একটি বস্তু রয়েছে।
আইজি বলেন, ‘‘আমরা আজ ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করি। ভোরে বম্ব স্কোয়াডের একটি দল আসে। তারা পরীক্ষা করে দেখে ওই গাড়িতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে।’’ প্রথমে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গাড়িটি নষ্ট করে দেয় বম্ব স্কোয়াড। সেই বিস্ফোরণেও আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার ভিডিয়ো
#WATCH J&K: In-situ explosion of the vehicle, which was carrying IED, by Police in Pulwama.
— ANI (@ANI) May 28, 2020
Major incident of vehicle-borne IED explosion was averted by Police, CRPF & Army after Pulwama Police got credible info last night that a terrorist was moving with an explosive-laden car pic.twitter.com/UnUHSYB07C
পুলিশের দাবি, ওই গাড়িতে যে বিস্ফোরক ছিল তার ওজন ৪০-৪৫ কেজি। ওই বিস্ফোরক তৈরিতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, আরডিএক্স ও অন্য বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছরে পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপি-র কনভয়ে হামলাতেও একই কায়দায় তৈরি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছিল জইশ ই মহম্মদ জঙ্গি আদিল দার।
আরও পড়ুন: চিনের পরিকল্পনা এ বার বহুমুখী, সঙ্ঘাত ছাপিয়ে যেতে পারে ডোকলামকেও
ঘটনাচক্রে এ বারের হামলার চেষ্টায় যে জঙ্গি যুক্ত বলে পুলিশের সন্দেহ তারও নাম আদিল বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। পুলিশের দাবি, আদিল আহমেদ হাফিজ় নামে ওই হিজবুল জঙ্গি জইশের কমান্ডার ফৌজি ভাইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই হামলার ছক কষেছে। সে-ই বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি চালাচ্ছিল। তার খোঁজে গোটা জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে এক ভিডিয়ো বার্তায় আদিলকে বাড়ি ফেরার আর্জি জানিয়েছেন তার দাদা ইজাজ় আহমেদ হাফিজ়। ওই বার্তায় ইজাজ়কে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘বাবা-মার সেবা করলেই স্বর্গে যাওয়া যাবে। যারা ভারতের চাল আর পাকিস্তানের নুন খায় তাদের জন্য প্রাণ দিয়ে কোনও লাভ নেই।’’
সম্প্রতি সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু-সহ বেশ কয়েক জন জঙ্গি নেতা নিহত হয়। তার ফলেই বেপরোয়া হয়ে জঙ্গিরা বাহিনীর উপরে পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি বাহিনীর। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় জম্মু-শ্রীনগর সড়কের উপরে সিআরপিএফের কনভয়ে একটি বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গি আদিল দার। সেই হামলার পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে জইশের ঘাঁটিতে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। ২৭ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরে পাল্টা হামলা চালায় পাক বায়ুসেনা।
আরও পড়ুন: লকডাউন নিয়ে মত জানতে অমিত শাহের ফোন মুখ্যমন্ত্রীদের
চলতি বছরের গোড়ায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অফিসার দেবেন্দ্র সিংহ জঙ্গি-যোগে গ্রেফতার হওয়ার পরে পুলওয়ামা হামলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিরোধীরা দাবি করেন, পুলওয়ামা হামলার আগে দেবেন্দ্রকে সেখানে দেখা গিয়েছিল। ওই হামলার পিছনে পাকিস্তান ছাড়া অন্য শক্তি রয়েছে কি না, তা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy