এ-পারে এসেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি সিধু। ছবি: এএফপি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খানের শপথ অনুষ্ঠানে পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর উপস্থিতি নিয়ে বিজেপি সমালোচনায় মুখর হয়েছে। কিন্তু ঘটনা হল, সিধু ইসলামাবাদ গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমতিক্রমেই। এর পিছনে কেন্দ্রের কৌশল কাজ করেছে বলেই বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পাক সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে ধরা বা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রেসিডেন্টের পাশে সিধুর বসা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। বিজেপি ও কংগ্রেস সমালোচনা করেছে প্রাক্তন এই ব্যাটসম্যানের। কিন্তু সে বিতর্কের বৃত্ত এবং উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সিধুকে ইসলামাবাদ পাঠিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে দ্বিপাক্ষিক জল মাপার কাজটি করেছে সাউথ ব্লক। এই ঘটনাটি বিচ্ছিন্নও নয়। ইমরান খানের জয়ের পর থেকেই একের পর এক বার্তা দিয়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষিয়ে যাওয়া পরিবেশে কিছুটা সুবাতাস বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে — এমনই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
গত মঙ্গলবার দু’দেশের ডিজিএমও পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। স্বাধীনতার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ইতিবাচক বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। কূটনীতিকদের মতে, বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর শান্তি এবং সংঘর্ষবিরতি বজায় রাখার জন্য দু’দেশের সেনাই সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করছে। এর পরেই দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা বন্দি-মুক্তির ঘটনা ঘটেছে। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এক বারও পাকিস্তান বা সন্ত্রাসবাদ শব্দ উচ্চারণ করেননি। বরং কাশ্মীর প্রসঙ্গে বাজপেয়ীর মানবিক অবস্থানের প্রতিধ্বনি করেছেন। বাজপেয়ীর মৃত্যুর পরে সে দেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনমন্ত্রী একা আসেননি, সঙ্গে এনেছিলেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের দুই শীর্ষ আমলাকে। তাঁরা নয়াদিল্লিতে সংক্ষিপ্ত সৌজন্য বৈঠকও করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: আইয়ার এবং সিধু নিয়ে খোঁচা রাহুলকে
সব মিলিয়ে স্পষ্ট, পাকিস্তানকে কিছুটা প্রশমিত করতে আস্থাবর্ধক ছোট ছোট পদক্ষেপ করছে দিল্লি। প্রশ্ন উঠছে, আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বের চাপেই এমনটা হচ্ছে কিনা। একটি অংশ মনে করছে, ২০১৯-এর ভোটের আগে পাকিস্তানের সঙ্গে কোন পথে গেলে ঘরোয়া রাজনীতিতে সুবিধা হবে, সেটা দেখে নিতে চাইছেন মোদী-অমিত শাহেরা। সার্জিকাল স্ট্রাইকের মতো পদক্ষেপ করে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তোলা, নাকি প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তির পায়রা ওড়ানো — ভোটবাক্সের জন্য কোনটি বেশি কার্যকরী হবে, তা যাচাই করে নিতে তৎপর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সিধুর মতো একটি চরিত্রকে ট্র্যাক টু-র কাজে লাগানো সুবিধাজনক। তিনি জনপ্রিয় ঠিকই, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নেতা নন। আজ দেশে ফিরে সিধু তাঁর আলিঙ্গন প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘যদি কেউ (বাজওয়া) আমাকে বলেন যে, গুরু নানকের ৫৫০তম প্রকাশ দিবস উপলক্ষে করতারপুর সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে, তা হলে আমি আর কী করতে পারি!’’ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রেসিডেন্টের পাশে বসা নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘‘অন্যত্র বসেছিলাম। পরে ওখানেই আমায় বসতে বলা হয়েছে। একজন অতিথি হিসেবে যা বলা হয়েছে, করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy