ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র মুকুটে ফের নতুন পালক। সোমবার ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, স্পেডেক্স মিশনের দুই কৃত্রিম উপগ্রহের ‘স্পেস ডকিং’ প্রক্রিয়া দ্বিতীয় বারের জন্য সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে তারা। ইসরোর এই সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহও।
সোমবার জিতেন্দ্র বলেন, “ইসরোর স্পেডেক্স মিশনটি গত ৩০ ডিসেম্বর পিএসএলভি-সি৬০ রকেটের সাহায্যে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এর পর, ১৬ জানুয়ারি ভোর ৬টা ২০ মিনিটে প্রথম বারের জন্য উপগ্রহগুলিকে সফল ভাবে ‘ডক’ করা হয়। ১৩ মার্চ সকাল ৯টা ২০ মিনিটে সফল ভাবে ‘আনডক’ও করা হয়েছিল উপগ্রহ দু’টিকে। এ বার সেগুলিকে ফের ডক করা হল। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে আরও পরীক্ষানিরীক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর।”
আরও পড়ুন:
গত ১৬ জানুয়ারি স্পেডেক্স মিশনের অধীনে দুই কৃত্রিম উপগ্রহ ‘এসডিএক্স ১’ ও ‘এসডিএক্স ২’-কে মহাকাশে পরস্পরের হাত ধরিয়েছিল ইসরো। সফল হয়েছিল ‘স্পেস ডকিং’ প্রক্রিয়া। চিন, রাশিয়া এবং আমেরিকার পর বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে স্পেস ডকিংয়ে সাফল্য পেয়েছিল ভারত। সেই সাফল্যের পর ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এর পর গত ১৩ মার্চ প্রথম প্রচেষ্টাতেই দুই উপগ্রহের আনডকিংয়ের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করে ইসরো। এ প্রসঙ্গে ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন বলেন, ‘‘৪৬০ কিলোমিটার বৃত্তাকার কক্ষপথে ৪৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকা উপগ্রহগুলিকে আনডক করা হয়েছিল। অনেক গবেষণা ও পরীক্ষানিরীক্ষার পর একটি সিমুলেটর তৈরি করা হয়েছিল এবং মোট ১২০টি সিমুলেশন পরিচালনা করে প্রথম প্রচেষ্টাতেই নির্ভুল ভাবে আনডকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল ইসরো।’’ অত্যন্ত কঠিন এই পরীক্ষায় ইসরোর সাফল্যকে ভারতের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবেই দেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
কী এই স্পেস ডকিং? ইসরো বলছে, দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহ— ‘এসডিএক্স ১’ (চেজ়ার) এবং ‘এসডিএক্স ২’ (টার্গেট) একই গতিবেগে একই দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার পর মহাকাশে (প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উচ্চতায়) একই বিন্দুতে একসঙ্গে পৌঁছে একত্রিত হয়েছিল। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার নামই স্পেস ডকিং। গত ৩০ ডিসেম্বর স্পেস ডকিংয়ের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চ প্যাড’ থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেট উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ওই রকেটের প্রধান পেলোড হিসাবেই পাঠানো হয়েছিল এসডিএক্স ১ এবং ২-কে। এ ছাড়া, ২৪টি সেকেন্ডারি পেলোডও পাঠানো হয়েছিল। ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। স্পেস ডকিং এবং আনডকিংয়ের সাফল্য সেই লক্ষ্যপূরণের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।