Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

পকোড়া বিক্রি কি কর্মসংস্থানের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে?

নতুন চাকরি, কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্নের মুখে তাঁদের যুক্তি ছিল, পকোড়া বেচে কেউ ২০০ টাকা আয় করলেও তাঁকে আর বেকার হিসেবে গণ্য করা যায় না। এ দিন সেই সূত্রেই মোদী সরকারকে বিঁধলেন চিদম্বরম। ছুঁড়লেন এক ডজন প্রশ্ন। কটাক্ষ করলেন সনিয়া গাঁধীও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

পকোড়া বিক্রি কি আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের ঠিক করে দেওয়া কর্মসংস্থানের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে? খাস সংসদে শেষমেশ প্রশ্নটা তুলেই দিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।

প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তারপরে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সম্প্রতি দু’জনেই জোর গলায় দাবি করেছেন, পকোড়া বেচাও রোজগারের মধ্যে পড়ে। নতুন চাকরি, কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্নের মুখে তাঁদের যুক্তি ছিল, পকোড়া বেচে কেউ ২০০ টাকা আয় করলেও তাঁকে আর বেকার হিসেবে গণ্য করা যায় না। এ দিন সেই সূত্রেই মোদী সরকারকে বিঁধলেন চিদম্বরম। ছুঁড়লেন এক ডজন প্রশ্ন। কটাক্ষ করলেন সনিয়া গাঁধীও।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় চিদম্বরম মোদী সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘‘বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। যে কাজ নিশ্চিত, নিয়মিত এবং যথেষ্ট নিরাপদ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন বা আইএলও তাকেই কর্মসংস্থান বলে। আপনাদের কর্মসংস্থানের সংজ্ঞাটা কী? আইএলও-র সংজ্ঞা মানলে চার বছরে কত চাকরি দিয়েছেন?’’

আরও পড়ুন: আয়না দেখে মুখ পরিষ্কার করুন: রাজ্যপাল

বছরে ২ কোটি কাজের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতির কী হল, এখন নিয়ম করে সেই প্রশ্ন তুলছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। বিঁধছেন অন্য বিরোধীরাও। সেই সূত্রেই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের দিকে তোপ দেগেছেন চিদম্বরম। প্রশ্ন তুলেছেন, অর্থনীতির হাল, রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা থেকে সরে যাওয়া নিয়েও।

প্রাক্তনের প্রশ্ন


বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি কত?


রাজকোষ ঘাটতি বাড়লে মূল্যবৃদ্ধির কী হবে?


আগামী দিনে সুদ বাড়লেই বা মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব কী?


বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ব্যারেলে ৭০ ডলার ছুঁলে, সরকার সামলাবে কী করে?


বাড়তি ৮৫ হাজার কোটি ঋণের অর্থ গেল কোথায়?


মূলধনী খাতে ব্যয় কমেছে। ধাক্কা কোন প্রকল্পে?


২০১৮-’১৯ সালে সরকারের তরফে বৃদ্ধির পূর্বাভাস কত?


চার বছরে কর্মসংস্থান কত?


উৎপাদন শুল্ক থেকে আয় প্রচুর বাড়িয়ে ধরা হয়েছে। আসল গল্পটা কী?


চলতি বছরে জিএসটি থেকে আয়ের অনুমান কত মাসের?


কর আদায় বৃদ্ধির অনুমান কি বাস্তবসম্মত?


কর্পোরেট করের থেকে জিএসটি বাবদ আয় বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। বোঝা কি তবে বেশি গরিবদের উপরেই?

লোকসভায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির পাল্টা যুক্তি, ঘাটতি কমাতে তাঁরা অবিচল। ইউপিএ সরকারের ৪.১% ঘাটতি ৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এ বছরও তা ৩.২ শতাংশে বাঁধা যেত। কিন্তু জিএসটি চালুর পরে প্রাথমিক ভাবে আয় কমে যাওয়ায় তার রাশ আলগা করতে হয়েছে।

বাজেটে লোকসভা ভোটের বাজি হিসেবে চাষের খরচের দেড় গুণ ন্যূনতম দাম, ১০ কোটি অভাবী পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য বিমা ইত্যাদি ঘোষণা করেছেন জেটলি। নতুন প্রভিডেন্ট ফান্ডের গ্রাহক সংখ্যা দেখিয়ে দাবি তুলেছেন, ৭০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের। সব গুলিকেই ‘জুমলা’ মনে করেন চিদম্বরম।

সকালে এই আক্রমণের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন অবশ্য সনিয়াই। কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে চেয়ারপার্সন সনিয়া বলেন, এই সরকার পুরনো প্রকল্পকেই নতুন নাম দিয়ে জাদুকরের মতো ঝোলা থেকে টেনে বের করছে। কিন্তু কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথা আসলে জুমলা। তাঁর খোঁচা, ‘‘এই সরকার ম্যাক্সিমাম মার্কেটিং, মিনিমাম ডেলিভারি।’’

সনিয়ার মতো ঠিক একই রকম সুরে চিদম্বরমের অভিযোগ, অর্থনীতির চিকিৎসক হিসেবে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন রোগ নির্ণয় করে, প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী জেটলি তার কিছুই মানেননি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy